নয়া দিল্লি : জ্বালানি তেলে জিএসটি ধার্যের দাবি উঠেছিল বেশ কয়েকদিন আগের থেকেই। জিএসটি কাউন্সিলে সেই বিষয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে এবার প্রাকৃতিক গ্যাসকে জিএসটির আওতায় আনার দাবি উঠল শিল্পমহলে। উল্লেখ্য, দেশে স্বচ্ছ জ্বালানি বা শক্তির প্রয়োগের জন্য উত্সাহ দিতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার। তবে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় স্বচ্ছ জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে এখনও অনীহা রয়েছে জনসাধারণের একটি বড় অংশে। মূলত করের বোঝার কারণেই দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বিগত দিনে বহুবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলায় শোনা গিয়েছে দূষণহীন জ্বালানি ব্যবহারের কথা। মোদীর সেই উক্তিকে হাতিয়ার করেই প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনকারী সংস্থাগুলি চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে। তাঁদের সাফ দাবি, কম খরচে প্রাকৃতিক গ্যাস সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এটিকে জিএসটির আওতায় আনা হোক। সীতারামনের কাছে পেশ করা বাজেট সুপারিশে এই দাবি তোলে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনকারী সংস্থাগুলির সংগঠন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির পাশাপাশি রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজও এই ফএডারেশনের সদস্য।
উল্লেখ্য, বিগত একবছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এই আবহে গতবছর পেট্রল-ডিজেলের দাম সেঞ্চুরির গণ্ডি পার করেছিল। আর তখন থেকেই জ্বালানি তেলকে জিএসটির আওতায় আনার দাবি জোরালো হয়েছে। এদিকে পেট্রল-ডিজেলের মতো প্রাকৃতিক গ্যাসও জিএসটির আওতায় পড়ে না। এবার তাই বাজেটের প্রাক্কালে প্রাকৃতিক গ্যাসকে জিএসটির আওতায় আনার দাবি উঠল। ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রির বক্তব্য, করের বোঝা, একেক রাজ্যে একেক হারে ভ্যাট, এই সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের দামের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে যেখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর ধার্য ভ্যাটের হার যথাক্রমে ১৪ শতাংশ, ১৪.৫ শতাংশ, ১৫ শতাংশ। এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশে এই হার ২৪.৫ শতাংশ। আর এই বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরে সংস্থাগুলির দাবি, জিএসটি চালু হলে সমতা আসবে করের হারে। সংস্থাগুলির যুক্তি, করে সমতা এলে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে উত্সাহিত করা যাবে সাধারণ মানুষকে।
জিএসটি লাগু হলে উৎপাদকরাও সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। তাঁরা জানান, জিএসটি চালু হলে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের উপরে মেটানো করের টাকা ফেরত পাবে সংস্থাগুলি। এদিকে জিএসটি চালু করা ছাড়াও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির খরচ কমাতে ও সহজলভ্য করতেও আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি করেছে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি। সংগঠনের বক্তব্য, যদি এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হয় তাহলে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার বাড়বে দেশে। আর তাহলে দূষণ সৃষ্টিকারী পেট্রল-ডিজেলের ব্যবহার কমবে ভারতে।