Jai Anmol Ambani: বড় ছেলেই বাজি দেউলিয়া অনিল অম্বানির, কীভাবে একাই হাল ফেরাচ্ছেন রিলায়েন্সের?

Mar 18, 2024 | 8:50 PM

Jai Anmol Ambani: ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের এক আদালতে নিজকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছিলেন অনিল। তবে, বর্তমানে দেউলিয়া বাবার আশার আলো হয়ে উঠেছেন জয় আনমোল অম্বানি। অনিলের বড় ছেলে। কীভাবে ডুবে যাওয়া রিলায়েন্সের হাল ফেরাচ্ছেন তিনি? কত টাকার মালিক?

Jai Anmol Ambani: বড় ছেলেই বাজি দেউলিয়া অনিল অম্বানির, কীভাবে একাই হাল ফেরাচ্ছেন রিলায়েন্সের?
বাবার সঙ্গে রিলায়েন্সের এজিএমে জয় আনমোল অম্বানি
Image Credit source: Twitter

Follow Us

মুম্বই: ব্যবসার জগতে ভাগ্য তৈরি হয় একদিনে, আবার ভেঙেও যেতে পারে একদিনেই। এই বিষয়ে, অম্বানি পরিবারের কাহিনির থেকে ভাল উদাহরণ আর হতে পারে না। অম্বানি পরিবারের কথা উঠলে, প্রথমেই যে নামটি মাথায় আসে, তা হল মুকেশ অম্বানি। বর্তমানে তিনিই ভারত তথা এশিয়ার সবথেকে ধনী ব্যক্তি। ফোর্বসের মতে বিশ্বের সবথেকে ধনীদের তালিতায় আছেন ১১ নম্বরে। মুকেশকে নিয়ে চর্চা চলে প্রায় সবসময়ই। মুকেশ একা নন, চর্চায় থাকেন তাঁর স্ত্রী নীতা এবং ছেলে-মেয়েরাও। এদিক থেকে অনেকটাই উপেক্ষিত তাঁর ভাই অনিল অম্বানি এবং তাঁর পরিবার। অথচ, একটা সময় অনিলই ছিলেন প্রচারের আলোকবৃত্তে। সেই সময় বিশ্বের ষষ্ঠতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন অনিল, সম্পত্তি ছিল ১.৮৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু, সুদিন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি তাঁর জীবনে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে ডুবে যায় তাঁর একের পর এক সংস্থা। ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের এক আদালতে নিজকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছিলেন অনিল। তবে, বর্তমানে দেউলিয়া বাবার আশার আলো হয়ে উঠেছেন জয় আনমোল অম্বানি। অনিলের বড় ছেলে।

বলা যেতে পারে, মুখে রুপোর চামচ নিয়ে জন্মেছিলেন জয় আনমোল অম্বানি। ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়িক বংশে জন্মগ্রহণ করায়, উত্তরাধিকার সূত্রেই অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর পরবর্তী যাত্রাটা মোটেই মসৃণ ছিল না। মুম্বইয়ের বিখ্যাত ‘ক্যাথেড্রাল অ্যান্ড জনস কনভেন্ট স্কুল’ থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে, ব্রিটেনের ‘সেভেন ওকস স্কুল’ থেকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। কিন্তু, নয়া শতাব্দীর প্রথম দশকের গোড়ার দিকেই আর্থিক সমস্যা শুরু হয়েছিল অনিল অম্বানির। অনিল ধীরুভাই অম্বানি গ্রুপের ঋণের বোঝা ক্রমে বাড়ছিল। পাল্লা দিয়ে কমছিল লাভের পরিমাণ। এক সময় যে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলি এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বৃদ্ধিকে গতি দিয়েছিল, সেগুলির সম্প্রসারণই অনিল অম্বানিকে দেউলিয়া হওয়ার দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।

এই সংকটের মধ্যে, তাঁর বাবার জন্য আশার আলো হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন জয় আনমোল অম্বানি। খুব অল্প বয়সেই পারিবারিক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। তরুণ আনমোলের বিশেষ আগ্রহ ছিল রিলায়েন্স ক্যাপিটালে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে রিলায়েন্স মিউচুয়াল ফান্ডে ইন্টার্নশিপ শুরু করেছিলেন তিনি। এই অভিজ্ঞতা তাঁর পরবর্তী জীবনে দারুণ কাজে লেগেছে। ২০১৪ সালে তিনি সংস্থায় যোগ দেন। রিলায়েন্স গোষ্ঠীতে ধাপে ধাপে পদোন্নতি হয় তাঁর। ২০১৬-য় রিলায়েন্স ক্যাপিটালের বোর্ডে অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদে বসেছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি তিনি রিলায়েন্স নিপ্পন লাইফ অ্যাসেট সংস্থার ম্যানেজমেন্ট এবং রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্সের বোর্ডের সদস্য।

জেঠু মুকেশ অম্বানির সঙ্গে আনমোল

পারিবারিক ব্যবসায় তিনি আধুনিক ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আমদানি করেন। আনমোল রিলায়েন্স গ্রুপে অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর, অনিল অম্বানির সংস্থার স্টকের দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। তাঁর বাবাও এর জন্য বড় ছেলের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন। আনমোলের উদ্য়োগেই জাপানি সংস্থা তিনি নিপ্পন, রিলায়েন্সে তাদের শেয়ার বাড়াতে রাজি হয়। যার ফলে রিলায়েন্স লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং রিলায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মতো দুটি নতুন উদ্যোগ গঠন করেছে রিলায়েন্স। জাগরনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জয় আনমোল অম্বানি, বর্তমানে ২০০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তির মালিক। ধীরে ধীরে ফের ট্র্যাকে ফিরছে রিলায়েন্স।

অনিল অম্বানির বড় ছেলে প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকতে ভালবাসেন। তবে, তিনি বেশ বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন বলে শোনা যায়। ল্যাম্বরগিনি গ্যালার্দো, রোলস-রয়েস ফ্যান্টমের মতো বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে তাঁর। তাঁর একটি নিজস্ব হেলিকপ্টার এবং বিমানও রয়েছে। এই কপ্টার-বিমান তিনি ব্যবসায়িক সফরের জন্য ব্যবহার করে থাকেন। ২০২২ সালে, তিনি ক্রিশা শাহকে বিয়ে করেন। বিয়ে হয়েছিল তাঁদের মুম্বইয়ের পারিবারিক বাংলো, ‘সি উইন্ডে’ই। নিজের ব্যবসায়িক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি ধীরে ধীরে তাঁর বাবাকে আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করছেন। তাঁর জ্যাঠতুতো ভাই অনন্ত, ইশা এবং আকাশ অম্বানিকে অনেক বেশি প্রচারে রয়েছেন। কিন্তু, নিজ অধিকারেই ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সমান সফল জয় আনমোল অম্বানি।

Next Article