
যুদ্পৃধথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধবিমান শুধু যুদ্ধ জয়ের গল্প বলে এমন নয়। যুদ্ধিবিমান শুধুমাত্র যুদ্ধের প্রয়োজনে ব্যবহার করা অস্ত্র নয়। এই ধরনের বিমানগুলো আসলে প্রযুক্তি ও জাতীয় গর্বের প্রতীক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে আধুনিক যুগের যুদ্ধক্ষেত্র, একাধিক ফাইটার জেট বদলে দিয়েছে ডগফাইটের সংজ্ঞা। যাদের এদের ক্ষমতা, গতি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আজও বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের অহঙ্কার ছিল এই যুদ্ধবিমান। এর ডিম্বাকৃতি ডানা এবং দ্রুত বাঁক নেওয়ার ক্ষমতা লুফ্টওয়াফে বা জার্মান বিমান বাহিনীর কাছে ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ‘ব্যাটল অফ ব্রিটেন’-এ এই বিমানই আগলেছিল ব্রিটেনের আকাশসীমার।
১৯৬০-এর দশকে আসা এই ফ্যান্টম ২ ছিল টুইন-ইঞ্জিন অল-ওয়েদার সুপারসনিক ইন্টারসেপ্টর। এর বহুমুখী ক্ষমতার কারণে একে গ্রাউন্ড অ্যাটাক থেকে রেইকি করা—সব ভূমিকাতেই ব্যবহার করা গিয়েছে। ঠান্ডাযুদ্ধের সময় এটি আমেরিকা ও ন্যাটোর একাধিক সহযোগী দেশের প্রধান ভরসা ছিল।
২০০০ সালের পর পরই আসে পঞ্চম প্রজন্মের এফ-২২ র্যাপ্টর। এর মূল বৈশিষ্ট্য হল র্যাডারকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা, যাকে স্টেলথ বলা হয় এবং সুপারক্রুজ বা আফটারবার্নার ছাড়া সুপারসনিক গতি। এখনও পর্যন্ত এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ফাইটার জেট।
মিকোয়ান গুরেভিচের মিগ-২১ বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত সুপারসনিক জেটগুলির মধ্যে একটি। এই বিমান ব্যবহার করেছে ৬০টিরও বেশি দেশ। বহু যুদ্ধে এর ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। একাধিক এয়ারফোর্স এখনও এই বিমান ব্যবহার করে। হালে ভারত এই বিমানের উন্নততর ভার্সন মিগ ২১ বাইসনকে চিরবিদায় জানিয়েছে।
বোয়িং এফ/এ-১৮ হর্নেট হল এমন এক মাল্টিরোল ফাইটার জেট যা এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার থেকে অপারেট করা যায়। ১৯৮০ সালের আশেপাশের সময় থেকে ইউএস নেভি ও মেরিন কর্পসের মেরুদণ্ড এই বিমান। আকাশ থেকে গ্রাউন্ড অ্যাটাক; সব মিশনেই এই যুদ্ধবিমানের নির্ভরযোগ্যতা তাকে ন্যাভাল অ্যাভিয়েশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে ফেলেছে।
ফ্রান্সের তৈরি এই চতুর্থ প্রজন্মের জেটটি তার চমৎকার ক্ষিপ্রতা এবং নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানার জন্য বিখ্যাত। উন্নত অ্যাভিওনিক্স ও অস্ত্র এটিকে এয়ার-টু-এয়ার আর এয়ার-টু-গ্রাউন্ড কমব্যাট, উভয় ক্ষেত্রেই অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি এই টুইন-ইঞ্জিন ফাইটার জেটটি লং-রেঞ্জ এয়ার সুপিরিয়রিটির জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এর অ্যাডভান্সড অ্যাভিওনিক্স এবং থ্রাস্ট-ভেক্টরিং ক্ষমতা একে জটিল এরিয়াল ম্যানুভার করার সুযোগ দেয়, যা ডগফাইটে বিশেষ সুবিধা এনে দেয়। ভারতীয় বায়ু সেনা এই বিমানকে সুখোই থেকে সুপার সুখোইয়ে উন্নীত করেছে।