নয়া দিল্লি: লালের সঙ্গেই তৈরি হয়েছিল সবুজ বাহিনী। বাড়ি বাড়ি নিরামিষ খাবার পৌঁছে দেওয়াই তাদের মিশন ছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হল জ্যোমাটো। মঙ্গলবারই অনলাইন ফুড অ্যাপের তরফে ঘোষণা করা হয় সম্পূর্ণ নিরামিষ খাবার পরিবেশন করা হবে। নিরামিষ খাবার যারা ডেলিভারি করবেন, তাদের জন্য বিশেষ সবুজ পোশাকও আনা হয়। কিন্তু এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হল জ্যোমাটো। ফুড ডেলিভারি সংস্থার তরফে জানানো হল, সমস্ত ডেলিভারি পার্টনাররা আগের মতো লাল জামাই পরবেন।
এ দিন সকালেই জ্যোমাটোর সিইও দীপিন্দর গয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, “আমরা নিরামিষ খাবার পরিষেবা দেওয়ার জন্য আলাদা কর্মী রাখলেও, সবুজ রঙ দিয়ে তাদের বিভাজনের সিদ্ধান্তকে তুলে নিচ্ছি। আমাদের সকল রাইডার, যার মধ্যে নিরামিষ খাবার ডেলিভারির জন্য রাইডারও রয়েছেন, তারা সকলেই লাল রঙের পোশাক পরবেন।”
যারা জ্যোমাটোর ‘পিওর ভেজ’ অপশন থেকে খাবার ডেলিভার করবেন, তারা দেখতে পাবেন যে অর্ডার ডেলিভারি করতে আসছেন ‘ভেজ অনলি ফ্লিট’ বা জ্যোমাটোর বিশেষ নিরামিষ ডেলিভারি পার্টনাররা। রাইডারদের সুরক্ষাই সর্বোত্তম বলে জানিয়েছেন জ্যোমাটোর সিইও।
সিদ্ধান্ত বদলের কারণ ব্যাখ্যা করে জ্যোমাটোর সিইও দীপিন্দর গয়াল বলেন, আমরা এখন বুঝতে পারছি যে গ্রাহকরা তাদের বাড়ির মালিকের সঙ্গে সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। আমাদের জন্য এমন কিছু হোক, চাইনা আমরা।”
জ্যোমাটো “পিওর ভেজ” অপশন আনার পরই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা যে যে সমস্যাগুলি তু্লে ধরেছেন, তার জন্যও ধন্যবাদ জানিয়েছেন দীপিন্দর। তিনি লেখেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলাফল কী হতে পারে, তা আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছেন। ভালবাসা ও সমালোচনা-সবই আমাদের সাহায্য করেছে। কোনও ইগো বা অহংকার ছাড়াই আপনাদের সব কথা সর্বদা শুনছি আমরা।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই জ্যোমাটোর তরফে নতুন পরিষেবা আনা হয়। ১০০ শতাংশ নিরামিষ খাবার ডেলিভারি করার ঘোষণা করা হয়। এই অপশনে সম্পূর্ণ নিরামিষ রেস্তোরাঁ থেকে খাবার ডেলিভারি করা হবে সবুজ বাক্সে। আমিষ খাবার পরিবেশন করা হয়, এমন কোনও দোকান থেকেও নিরামিষ আনা হবে না। এমনকী বিশেষ ডেলিভারি পার্টনাররা কেবল নিরামিষ খাবারই ডেলিভারি করবেন, তারা এই খাবার নিয়ে কোনও আমিষ রেস্তোরাঁতেও ঢুকবেন না।
এই ঘোষণার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। একদল এই সিদ্ধান্তকে আধুনিক সমাজের শ্রেণি বিভাজন বলে অ্যাখা দেন। অনেকেই জানান যে ইউনিফর্মের রঙে পার্থক্য থাকায় বহু বাড়ি মালিকরাই লাল জামা পরা ডেলিভারি পার্টনারদের ঢুকতে বাধা দিতে পারেন। নিরামিষভোজীদের মাঝে যারা আমিষভোজী থাকেন, তারা সমস্যায় পড়তে পারেন।