চণ্ডীগঢ়: পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে (Punjab Assembly Election Result 2022) মুখ থুবড়ে পড়েছে অন্তর্কলহে জর্জরিত কংগ্রেস শিবির। কংগ্রেস পঞ্জাবের দুই তাবড় নেতা চরণজিৎ সিং চন্নি ধরাশায়ী হয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান নভজোৎ সিং সিধুর (Navjot Singh Sidhu) হার প্রায় নিশ্চিত। পঞ্জাবে ঝাড়ু ঝড়ে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই ভরাডুবির মুখে টুইট নভজোৎ সিং সিধুর। হারের মুখে আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party) বড় জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান। টুইটারে কেজরীবালদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “মানুষের রায় হল ভগবানের রায়। পঞ্জাবের আম জনতার রায়কে মাথা পেতে মেনে নিচ্ছি। আম আদমি পার্টিতে অভিনন্দন।” অমৃতসর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছিলেন নভজ্যোৎ সিং সিধু। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে শেষ হাসি যে তিনি হাসতে চলেছেন এমন কোনও ইঙ্গিতই নেই। পিছিয়ে রয়েছেন শিরোমণি অকালি দলের প্রার্থী বিক্রম সিং মাজিথিয়াও।
The voice of the people is the voice of God …. Humbly accept the mandate of the people of Punjab …. Congratulations to Aap !!!
— Navjot Singh Sidhu (@sherryontopp) March 10, 2022
দশম রাউন্ডের গণনা শেষে আম আদমি পার্টি জীবন জ্যোৎ কউরের থেকে ৪ হাজার ৮৬৯ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন সিধু। অথচ এই অমৃতসর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই গত নির্বাচনে জয়ী ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন সিধু। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪২ হাজার ৮০৯ ভোটের ব্যবধানে জিতে এসেছিলেন তিনি। ভোট শতাংশের নিরিখে ৬১.০১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। প্রথমত ক্রিকেটার হিসেবে খ্যাতি, তার উপর রাজনৈতিক কেরিয়ারেও মোটের উপর ভালই সাফল্য। কিন্তু তার পরেও কেন এভাবে মুখ থুবড়ে পড়লেন প্রদেশ সভাপতি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই ব্যর্থতার কারণ হিসেবে কংগ্রেসের অন্তর্কলহকেই দায়ী করছেন।
নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই, পঞ্জাব কংগ্রেসের অবস্থা যথেষ্ট টালমাটাল ছিল। বার বার দলের কঙ্কালসার চেহারা প্রকাশ্যে এসেছিল। শুরুটা হয়েছিল, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং সিধুর মধ্যে বিবাদকে ঘিরে। তারপর ক্যাপ্টেন দল ছাড়ার পর অনেকেই মনে করেছিলেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হয়ত তিনিই হবেন। সিধু নিজেও তেমনটাই আশা করেছিলেন। কিন্তু আম জনতার কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে কংগ্রেসের হাইকমান্ড থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদে চন্নিকে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, হাইকমান্ডের সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও, চন্নির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনওদিনই খুব একটা সুমধুর ছিল না। একাধিকবার দলের তরফে সেই দ্বন্দ্ব ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও, তা কোনওদিনই কার্যকর হয়নি। এমনকী এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদ প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়েও বার বার বেআব্রু হয়েছিল কংগ্রেসের অন্তর্কলহ। সিধুর এই পদে থাকার উচ্চাকাঙ্খাই কি তাহলে শেষ পর্যন্ত ভরাডুবির কারণ হয়ে উঠল? এমন প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।