লালগড়: “সিপিএমকে ভোট দিয়ে ভোটটা নষ্ট করবেন না।” ঝাড়গ্রামে (Jhargram) প্রচারে গিয়ে এই ভাষাতেই বার্তা দিলেন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার লালগড়ের সভা থেকে বিরোধীদের নিশানা করে তিনি বলেন, “যারা সিপিএমের হার্মাদ ছিল, তারাই আজ বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম তথা জঙ্গলমহলের উন্নতির খতিয়ান এ দিন তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, একসময় জঙ্গলমহলে কিছুই করেনি সিপিএম।
একসময় মাও অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের স্মৃতি হাতড়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন ঝিটকার জঙ্গলে যখন কেউ ঢুকতে পারত না, সেই সময় তিনি এসেছেন। তিনি বলেন, “একসময় লালগড়ে মানুষ আসতে ভয় পেত। ঝিটকার জঙ্গল, ভাদুপুরের জঙ্গল পেরোতে ভয় পেত। সেই সময় আমি এসেছি। তাই লালগড় আমার কাছে নতুন জায়গা নয়।” তাঁর দাবি করেন একসময় বছরে ৩০০ করে মানুষ মারা যেতেন আর আজ লালগড় ভালো আছে। নেতাইয়ের ঘটনা উল্লেখ করে মমতার দাবি, নেতাইয়ে খুনের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল, তারাই আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগে আমাকে সিপিএম মেরেছে, এখন বিজেপি মারছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গাম গ্রামে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ঝাড়গাম থেকে জয়ী হয়ে বিজেপির সাংসদ হয়েছিলেন সুভাষ সরকার। তাই এদিন লালগড় থেকে বিজেপিকে আক্রমণ করতে ভোলেননি মমতা। তিনি দাবি করেন লোকসভা নির্বাচনের পর বছর দুয়েক কেটে গেলেও কোনও উন্নতি হয়নি। তবে তিনি লালগড়ের জন্য কি কি করেছেন সেই খতিয়ান তুলে ধরেন এদিন। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, স্কুল তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মমতা। একইসঙ্গে বাম শাসনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সেই সময় কেউ ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলেও যেতে পারত না।”
লালগড়ে পুরনো শত্রু বামেদের পাশাপাশি বিজেপিকে নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমি এত কষ্ট করে আসছি, কারণ আগেরবার এই আসন থেকে আমরা হেরে গিয়েছি।” তাই হাতজোড় করে সবার কাছে ভোটের আর্জি জানান নেত্রী। সুভাষ সরকারের নাম না করে মমতা বলেন, “একবার ভোট দিয়ে ভুল করেছেন, আর করবেন না। কোভিডের সময় কোথায় ছিলেন ডাক্তারবাবু?” এছাড়া তাঁর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে আদিবাসী উন্নয়নকেই এই কেন্দ্রের জন্য হাতিয়ার করতে চাইছে তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য এবার তৃণমূ্লের নতুন প্রার্থী হলেন সাঁওতালি সিনেমার নায়িকা, পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী বীরবাহা হাঁসদা। এই কেন্দ্রে বিধায়ক ছিলেন ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত সুকুমার হাঁসদা। আর অভিনেত্রী তৃণমূলে যোগদান করার পরেই ঝাড়গ্রাম বিধানসভার জন্য টিকিট পান।