শুক্রবারও মাদক মামলায় জামিন পেলেন না শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান। এ দিন মুম্বইয়ের আদালত আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধামেচার জামিনের আবেদন ফের খারিজ করে দিয়েছে। অ্যাডিশনাল মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আরএম নীলেকর তিন অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন।
মাদক-কাণ্ডে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ানের জামিনের আবেদনের শুনানি ধর্তব্য়ের মধ্যে নয় বলে জানাল এনসিবি। এনসিবির বিশেষ আদালতের যুক্তি যেহেতু অভিযুক্তদের কাছ থেকে কিছু মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেই কারণে এই জামিন মামলার শুনানি একমাত্র জেলা দায়রা আদালতেই বিচার হতে পারে। জেলা আদালতের তলায় কোনও ম্য়াজিস্ট্রেট আদালতে বিচার হতে পারে না।
নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর তরফে এএসজি অনিল সিং এ দিন তিন অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করেন। এনডিপিএস আইনের আওতায় তাঁরা দোষী বলে দাবি করেন তিনি। এনসিবির হেফাজতে নয় আরিয়ান সহ বাকি অভিযুক্তরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী থাকবেন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। জামিন পেলে প্রভাব খাটিয়ে আরিয়ান প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনিল।
এ দিন অনিল বলেন, “এরা প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রমাণ নষ্ট করার একটা সুযোগ থাকতেই পারে। আমাদের কাছে অনেক উপাদান রয়েছে। এই সময়ে জামিন তদন্তের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।”
আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানেশিন্ডে ফের এ দিন আদালতে সওয়াল করেন, আরিয়ান খানের কাছ থেকে কোনও কিছু পুনরুদ্ধার হয়নি এবং এনডিপিএস আইনের ৩৭ ধারায় জামিনের কঠোরতা তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু সে আর্জি মানতে নারাজ আদালত।
আরিয়ানের হয়ে তাঁর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, যদি তাজ হোটেল থেকে মাদক উদ্ধার হয়, তবে কি তাজ হোটেলে উপস্থিত সবাইকেই দোষী বলে গণ্যা করা হবে? এরই পাশাপাশি, তাঁর মক্কেলের হয়ে সতীশ মানশিন্ডে বলেন, “ওঁরা নিজেদের গ্রুপে অথবা পৃথক পৃথক ঘরে পার্টি করছিল”। পাশাপাশি এনসিবি’র হেফাজত বৃদ্ধির দাবির পাল্টা তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এনসিবি কি হেফাজতে না নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না?” তিনি আরও জানান, এনসিবি’র কাছে তাঁর মক্কেলের ফোনের যাবতীয় চ্যাট ইতিমধ্যেই রয়েছে। যা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানোও হয়েছে। তাই এনসিবি যদি নথি নষ্ট করার আশঙ্কা করে থাকে তাও অমূলক। অন্যদিকে মাদককাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মোহক জয়সালের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেল আরিয়ান বা আরবাজকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন না। মোহক দিল্লিতে থাকেন। এনসিবিকে উদ্দেশ্য করে মোহকের আইনজীবী আরও বলেন, “তাঁরা প্রমাণ করে দেখাক মুম্বইয়ে কোনও মাদক পাচারকারীর সঙ্গে আমার মক্কেলের যোগাযোগ রয়েছে।”
গত শনিবার কর্ডেলিয়া ক্রুজ নামে এক প্রমোদতরীতে তিনদিনের একটি মিউজিক্যাল সফরের আয়োজন করা হয়েছিল। বলিউড, ফ্যাশন ও বাণিজ্যজগতের তাবড় ব্যক্তিত্ব এই সফরে সঙ্গী হন। ক্রে’আর্ক শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ফ্যাশনটিভি ইন্ডিয়া। ৪ অক্টোবর তা গোয়া ঘুরে ফের মুম্বইতে ফেরত আসার কথা ছিল। এদিকে এই প্রমোদতরণী নিয়ে এনসিবির কাছে আগাম ড্রাগ-মজুতের খবর যায়। সেই ড্রাগ যে এই প্রমোদ-সফরের বড় অংশ হতে চলেছে তাও জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
এরপরই একেবারে বলিউডি কায়দা সেই তরণীতে ওঠেন বেশ কয়েকজন এনসিবি কর্তা। কর্ডেলিয়া ক্রুজে তল্লাশি চালাতেই তাঁদের কাছে উঠে আসে একের পর এক মাদকের খোঁজ। কোকেন, এমডিএমএ, এক্সটেসি বাদ ছিল না কিছুই। এরপরই মাদক রাখার প্রমাণ পাওয়ায় আটজনকে আটক করা হয়। সেখানে ছিলেন শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খানও। গত শনিবার রাতে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় কিং খানের পুত্রকে।
আরও পড়ুন, Mona Singh: মহিলাদের যত বয়স বাড়ে তত সুন্দর দেখতে হয়: মোনা সিং