মুম্বই: মালেগাঁও বিস্ফোরণ (Malegaon Blast Case) মামলায় নিয়মিত হাজিরা দেওয়া থেকে রেহাই পেলেন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর (Pragya Thakur)। মঙ্গলবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশেষ আদালত (Special Court) এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।
২০০৮ সালে মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নাম জড়ায় প্রজ্ঞা ঠাকুর সহ সাতজনের। এনআইএ (NIA) তদন্ত শুরু করার পর ২০১৯ সালে আদালত নির্দেশ দেয় অভিযুক্তদের সকলকে সপ্তাহে একবার আদালতে হাজিরা দিতে হবে। সেই বছর জুন মাসে হাজিরা দেওয়ার পর অসুস্থতা ও নানা কারণ দেখিয়ে বারংবার হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর আদালত প্রজ্ঞা ঠাকুরকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার শেষ সুযোগ দেয়। এরপরই অবশেষে সোমবার তিনি হাজিরা দেন।
মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদের আইনজীবী জে পি মিশ্র (JP Mishra) একটি লিখিত আবেদন করে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি চান। তিনি আবেদনপত্রে বলেন, “প্রজ্ঞা ঠাকুরের নানারকম শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে এবং বর্তমানে এইমস-এ চিকিৎসা চলছে। তিনি মুম্বইতে এসেও কোকিলাবেন হাসপাতালে নানা পরীক্ষা করান। হাসপাতালের চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন তাঁর শারীরিক জটিলতা রয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য একদল চিকিৎসকের প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: বিদেশে কোভিশিল্ড রফতানিতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, সাফ জানালেন সেরাম কর্তা
একইসঙ্গে তিনি আবেদনপত্রে আরও জানান, “প্রজ্ঞা ঠাকুরের জীবনের ঝুঁকি থাকার কারণে মধ্য প্রদেশ পুলিস তাঁকে ছয়জন সশ্রস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা দিয়েছে। এছাড়াও দুজন নিরাপত্তারক্ষী তাঁর সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকেন। এতজন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে সব জায়গায় যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য বিষয়।”
প্রজ্ঞা ঠাকুরের এই আবেদনের ভিত্তিতেই বিশেষ বিচারপতি অবিনাশ রাসাল তাঁকে নিয়মিত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। তবে মামলার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আদালতের নির্দেশ পেলেই হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। একইসঙ্গে এর আগে বারবার হাজিরা না দেওয়ায় অসন্তোষও প্রকাশ করেন বিচারপতি।
২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মালেগাঁওয়ের একটি মসজিদের কাছে একটি বিস্ফোরক বাঁধা মোটরবাইকে বিস্ফোরণ ঘটায় ছয়জনের মৃত্যু হয়, আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। প্রজ্ঞা ঠাকুর ছাড়াও কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত, সমীর কুলকার্নি, রমেশ উপাধ্যায়, সুধাকর চতুর্বেদী, অজয় রাহিরকর ও সুধাকর দ্বিবেদীর নাম জড়ায়। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ১৬ (সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত) ও ১৮ (সন্ত্রাসবাদী হামলার চক্রান্ত) নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০(বি) (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৩০২ (খুন), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ৩২৪ (স্বতপ্রণোদিতভাবে আঘাত) ও ১৫৩(এ) ধারায় (দুটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বাড়ানোর চেষ্টা) অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জানুয়ারির শেষে শুরু বাজেট অধিবেশন, করোনায় কমছে সময়সীমা