ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারীর আখ্যা কেন্দ্রের, চলবে রাজ্যভিত্তিক নজরদারি

সুমন মহাপাত্র |

May 20, 2021 | 6:35 PM

প্রত্যেক সরকারি, বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে এই নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারীর আখ্যা কেন্দ্রের, চলবে রাজ্যভিত্তিক নজরদারি
ফাইল চিত্র।

Follow Us

নয়া দিল্লি: দেশে দ্বৈত মহামারী। করোনা বিপদের মধ্যেই ছড়াচ্ছিল নতুন রোগ মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus)। ইতিমধ্যেই এই রোগকে মহামারী আখ্যা দিয়েছে রাজস্থান ও তেলঙ্গানা। এ বার আরও সতর্ক হল কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে ব্ল্যাক ফাঙ্গার রোগটিকে মহামারী আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সব রাজ্যকেও এই রোগকে মহামারী ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি আক্রান্তদের রিপোর্ট দিল্লি পাঠাতে হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম স্বাস্থ্য সচিব লব আগরওয়াল চিঠি দিয়ে রাজ্যগুলিকে জানিয়েছেন, প্রত্যেক সরকারি, বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে এই নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে এইমস। এক নজরে সেই নির্দেশিকা…

কারা দ্রুত আক্রান্ত হতে পারেন?

১. যে সমস্ত রোগীদের দেহে ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, কিংবা যাঁরা স্টেরয়েড নেন, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসের সম্ভাবনা বেশি।

২. যে সকল রোগীর ক্যানসার বা জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী কোনও রোগের চিকিৎসা চলছে, তাঁদের দেহেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বাসা বাঁধতে পারে।

৩. যে সকল করোনা রোগীর সংক্রমণ অত্যন্ত জটিল স্তরে পৌঁছে গিয়েছে, যাঁরা মাস্ক বা ন্যাজাল ক্যানেলের মাধ্যমে অক্সিজেন সাপোর্ট বা ভেন্টিলেটরে রয়েছেন, তাঁদের দেহেও মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে।

৪. যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন, তাঁদেরও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হতে পারে।

এইমসের চিকিৎসকরা এই সংক্রমণ দ্রুত নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসকদের, বিশেষ করে চোখের চিকিৎসকদের নিয়মিত রোগীকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও যাতে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে চেক আপ করানো হয়, তার পরামর্শ দিয়েছে এইমস।

গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ: 

১. নাক থেকে অস্বাভাবিক রকমের কালো তরল বা রক্ত বের হওয়া, কিংবা নাকের উপর কালো শক্ত ভাব।

২. নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথা বা চোখ ব্যাথা, চোখের চারপাশে ফোলা ভাব, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, অস্পষ্ট দেখা বা কিছুই দেখতে না পাওয়া, চোখ খুলতে না পারা।

৩. মুখে অসাড়বোধ বা অদ্ভুত শিরশিরানি অনুভব।

৪. মুখ খুলতে বা খাবার চেবাতে অসুবিধা।

৫. দাঁত পরে যাওয়া, মুখের ভিতর, দাঁতের আশেপাশে ফুলে যাওয়া বা কালো ছোপ সৃষ্টি।

এ ক্ষেত্রে রোগীর নিজেরই প্রতিদিন পরীক্ষা করা উচিত বলে মনে করছেন এইমস-এর চিকিৎসকেরা। দিনের আলোয় মুখের কোথাও ফুলেছে কিনা, বিশেষত নাক, গাল বা চোখের পাশে, কালো দাগের সৃষ্টি, মুখের কোথাও হাত দিলে শক্ত অনুভব বা ব্যথা হলেই চিকিৎসককে জানানো উচিত।

কীভাবে চিকিৎসা হবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের?

১. যদি উপরোক্ত কোনও উপসর্গ দেখা যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে ইএনটি চিকিৎসক, চোখের চিকিৎসক বা যে চিকিৎসকের অধীনে এতদিন করোনার চিকিৎসা চলেছে, তাঁকে জানানো প্রয়োজন।

২. নিয়মিত চিকিৎসা ও ফলো-আপ রাখা। মধুমেহ অত্যন্ত কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ।

৩. কো-মর্ডিবিটি থাকলে, সেই রোগগুলির জন্য নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধ সেবন।

৪. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

৮. নিজে থেকে কোনও স্টেরয়েড বা অ্যান্টি বায়োটিক কিংবা অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ সেবন করবেন না।

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন অপচয় রোখায় জোর প্রধানমন্ত্রীর, ‘সুপারফ্লপ মিটিং’ পাল্টা মমতার

Next Article