নয়াদিল্লি: একটি মানহানির মামলায় বিপাকে পড়লেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। তৃণমূল সাংসদকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রাক্তন আমলা লক্ষ্মী পুরীর মানহানির মামলায় সোমবার তৃণমূলের সাংসদকে জরিমানা করল দিল্লি হাইকোর্ট। এমনকি, একমাসের মধ্যে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে লক্ষ্মী পুরীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা চেয়ে বার্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এক্স হ্যান্ডলেও (পূর্বতন টুইটার) পুরীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পোস্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২১ সালের জুনে। প্রাক্তন আমলা লক্ষ্মী পুরী ও তাঁর স্বামী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ তুলে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন সাকেত গোখলে। পোস্টে গোখলে লিখেছিলেন, লক্ষ্মী পুরী সুইৎজারল্যান্ডে সম্পত্তি কিনেছেন। এমনকি, লক্ষ্মী পুরী ও হরদীপ সিং পুরীর আয়ের উৎস নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট করেছিলেন তিনি।
গোখলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন লক্ষ্মী পুরী। ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা, অসত্য টুইট ডিলিট করতে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান তিনি। এরপরই ওই বছরের ১৩ জুলাই পুরীর বিরুদ্ধে সমস্ত পোস্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিলিট করতে সাকেত গোখলেকে নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। এমনকি, প্রাক্তন আমলার বিরুদ্ধে আর কোনও মানহানিকর পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয় আদালত। সেইসময় আদালত জানিয়েছিল, তারা নির্দেশে কিছু পরিবর্তন করতে পারে। আদালত জানিয়েছিল, একজন সরকারি কর্মীর আয়ের উৎস নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার রয়েছে যেকোনও নাগরিকের। তবে তা নিয়ে প্রকাশ্যে বলার আগে সংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তি কিংবা প্রশাসনের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইতে হবে। এরপর এদিন বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভম্ভানির বেঞ্চ সাকেত গোখলেকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল। এমনকি, এক্স হ্যান্ডলে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে পোস্টটি ৬ মাস রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
লক্ষ্মী পুরীর মতো তাঁর স্বামী হরদীপ সিং পুরীও একজন প্রাক্তন আমলা। ১৯৭৪ ব্যাচের IFS তিনি। ব্রাজিল, জাপান, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। আমলার পদ থেকে অবসরগ্রহণের পর ২০১৩ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে।