El Nino: ৫ বছরের মধ্যেই ‘ফুটন্ত কড়াই’ হবে পৃথিবী, আতঙ্কের দ্বিতীয় নাম এখন ‘এল নিনো’

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Oct 19, 2023 | 2:15 PM

Temperature Rising: মহাসাগরের জল গরম হলে, তার প্রভাব পড়ে বায়ুমণ্ডলেও। আর এই প্রভাব শুধু প্রশান্ত মহাসাগরে নয়, গোটা বিশ্বেই পড়ছে।  কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী,গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সর্বত্রই বাড়ছে তাপমাত্রা। ২০১৪-২০১৫ সালে এল নিনোর দাপটে ২০১৬ সালে উষ্ণতম বছর পেয়েছিল বিশ্ব। আবার হাজির এল নিনো।

El Nino: ৫ বছরের মধ্যেই ফুটন্ত কড়াই হবে পৃথিবী, আতঙ্কের দ্বিতীয় নাম এখন এল নিনো
প্রতীকী চিত্র
Image Credit source: Pixabay

Follow Us

কলকাতা: বিষিয়ে উঠছে বাতাস। বায়ুমণ্ডলে ক্রমাগত বাড়ছে গ্রিন হাউস গ্যাস। কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইডের মতো মারাত্মক ক্ষতিকর গ্যাসের ক্রমাগত নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনকে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। প্রকৃতির রোষানলে মরছে মানবজাতিই। বিগত কয়েক বছরে বিশ্বজুড়েই বেড়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সংখ্য়া।  বিপদে নতুন সংযোজন এল নিনো, যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে গোটা বিশ্বই।

‘এল নিনো’ স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ ‘ছোট ছেলে’। তবে এই এল নিনোই বড় বিপদ বয়ে আনছে।  এন নিনোর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব প্রান্তের জলের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে জলের তাপমাত্রা। জলের তাপমাত্রা বাড়লে সমূহ বিপদ।

মহাসাগরের জল গরম হলে, তার প্রভাব পড়ে বায়ুমণ্ডলেও। আর এই প্রভাব শুধু প্রশান্ত মহাসাগরে নয়, গোটা বিশ্বেই পড়ছে।  কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী,গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সর্বত্রই বাড়ছে তাপমাত্রা। ২০১৪-২০১৫ সালে এল নিনোর দাপটে ২০১৬ সালে উষ্ণতম বছর পেয়েছিল বিশ্ব। আবার হাজির এল নিনো। তাই বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরও উষ্ণতম বছর পেবে বিশ্ব। অর্থাত্‍ ক্রমে গরম বাড়বে। এবার প্রশ্ন হল, কতটা বাড়বে?

শিল্পবিপ্লব শুরুর পর থেকেই পৃথিবী ক্রমে বেড়ে চলেছে। তাই শিল্পবিপ্লবের আগের সময়ের তাপমাত্রাকে ভিত্তি করেই বর্তমান সময়ে তাপমাত্রার বাড়াবাড়ির আন্দাজ পাওয়ার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। প্যারিস চুক্তিতেই বলা হয়েছিল, শিল্পবিপ্লব-পূর্ববর্তী গড় তাপমাত্রার চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়া অনিবার্য। তাই যে ভাবেই হোক, গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধিকে কোনও ভাবেই ‘১.৫ ডিগ্রির চৌকাঠ’ পেরোতে দেওয়া যাবে না।

এতদিন ‘১.৫ ডিগ্রি’ বা ‘২ ডিগ্রির চৌকাঠ’ পেরোনোর কথা উঠলে ২১০০ সাল বা কমিয়ে ২০৮০ সালের কথা বলতেন রাষ্ট্রপুঞ্জের বিজ্ঞানীরা। বড়জোর ২০৫০ সালের কথা আসত। এখন দেখা যাচ্ছে, দুয়ারে দাঁড়িয়ে বিপর্যয়! কারণ, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলে দিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই  ১.৫ ডিগ্রির তাপমাত্রার চৌকাঠ পার করবে বিশ্ব। এমনকী, স্বাভাবিকের থেকে ১.৮ ডিগ্রিও তাপমাত্রার বৃদ্ধি হতে পারে।

পৃথিবী উষ্ণ হয়ে ওঠার অর্থ হল, এক্সট্রিম ইভেন্ট।  অর্থাত্‍ চরম বিপর্যয় ঘটবে আরও বেশি করে। যেমন, তাপপ্রবাহ, খরা, দাবানল। দুর্যোগ, বিপর্যয় মানেই মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি। বিশ্ব আবহাওয়ার সংস্থার পূর্বাভাস শুনে মনে হতেই পারে, অযথা ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি অযথা?  এপ্রিল বা জুনে যে শুধু বাংলা-ওড়িশা তাপপ্রবাহে পুড়েছে, তা নয়। বিশ্বের বহু জায়গাতেই এক ছবি দেখা গিয়েছে।

সবচেয়ে আশঙ্কা হল, মেরুপ্রদেশের তাপমাত্রা তিন গুণ বাড়তে পারে। ফলে হিমবাহ গলবে। আর হিমবাহ গললেই, সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে। তাতে আরও বিপদ বাড়বে।  সুন্দরবনের মতো নিচু এলাকাগুলি জলের তলায় চলে যাবে। গত বছরের পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যার একমাত্র কারণ কিন্তু প্রবল বৃষ্টি ছিল না। গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহের কারণে পাকিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চলে হিমবাহ গলতে শুরু করেছিল। বর্ষায় বৃষ্টি আর হিমবাহ গলা জলই বিপদ ডেকে আনে। এল নিনোর ঠেলায় চাষিদের বিপদও বাড়তে পারে, আর উৎপাদন কম হলে তার ফল ভুগতে হবে আমজনতাকেও।

 

Next Article