অপেক্ষার অবসান। অবশেষে ঘোষণা হল লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। এ দিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে। ১ জুন অবধি ভোট গ্রহণ চলবে। ভোট গণনা ও ভোটের ফল প্রকাশ হবে ৪ জুন। মোট ৭ দফায় লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। সাত দফায় ভোট গ্রহণ করা হবে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তর প্রদেশে। বাকি কোন রাজ্যে কত দফায় ভোট গ্রহণ করা হবে, লোকসভা নির্বাচনে কী কী নতুন নিয়ম চালু হতে চলেছে, এই সংক্রান্ত জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা দেখুন সরাসরি-
২২ রাজ্যে এক দফাতেই ভোট গ্রহণ করা হবে। ২ দফায় ভোট হবে ৪ রাজ্যে, কর্নাটক, ত্রিপুরা, মণিপুর ও রাজস্থানে। ৩ দফায় ভোট হবে অসম ও ছত্তীসগঢ়ে। ৪ দফায় ভোট ওড়িশা, মধ্য প্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডে। ৫ দফায় ভোট মহারাষ্ট্র ও জম্মু-কাশ্মীরে। ৭ দফায় ভোট হবে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ ও বিহারে।
পঞ্চম দফায় নির্বাচন ২৬ এপ্রিল থেকে ২০ মে অবধি। ৪৯ কেন্দ্রে ভোট। ষষ্ঠ দফায় নির্বাচন ৫৭ কেন্দ্রে ভোট। ২৯ এপ্রিল থেকে ২৫ মে অবধি। উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গে ভোট। সপ্তম দফায় ভোট ১ জুন। পঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশায় ভোট।
তৃতীয় দফায় ভোট ৭ মে।
দ্বিতীয় দফায় ভোট ২৬ এপ্রিল।
৭ দফায় লোকসভা নির্বাচন। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট। তামিলনাড়ু, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরে সহ ২১ রাজ্যে ভোট।
ওড়িশায় প্রথম দফা নির্বাচন ১৩ মে, দ্বিতীয় দফা ২০ মে, তৃতীয় দফা ২৫ মে।
সিকিমে ২০ মার্চ , ১৯ এপ্রিল নির্বাচন।
উপ-নির্বাচন বাকি রয়েছে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, কর্নাটক সহ ২৬ রাজ্যে। লোকসভার সঙ্গেই উপ-নির্বাচন হবে। ৪ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। অন্ধ্র প্রদেশে ১৮ এপ্রিল নোটিস, ২৪ তারিখে নির্বাচন।
মোট ২১০০ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। তারাই বাহিনী নিয়োগ করবেন।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কোনওভাবে শিশুদের ব্যবহার করা যাবে না। কড়া নির্দেশ কমিশনের।
৫৩৭ দলকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরা প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিত। অন্য দলের গাড়ি ব্যবহার করত। এমন দল-কে এবার নির্বাচন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের ডিজিটাল রেকর্ড থাকবে কমিশনের কাছে।
সংবাদমাধ্যমকেও নির্দেশ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। কোনও বিজ্ঞাপন হলে, তা জানিয়ে দিতে হবে।
প্রত্যেক তারকা প্রচারককে নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইনের নোটিস দিতে হবে। ইস্যু ভিত্তিক প্রচার হোক, কিন্তু ঘৃণামূলক মন্তব্য, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ করা চলবে না।
নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার নিয়েও আমরা সতর্ক। ফেক নিউজ তৈরি করা যাবে না। এবারের নির্বাচনে নয়া নিয়ম- রাজ্যের হাতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিলিট করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। তথ্য যাচাই করা হবে। নিজেরাও সতর্ক হন। যাচাই না করে শেয়ার করবেন না।
কোনও বিনামূল্যে উপহার দেওয়া চলবে না। টাকা, মদ, শাড়ি, প্রেসার কুকারের মতো জিনিস দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেই কড়া পদক্ষেপ। জিএসটি-র মাধ্যমে নজর রাখা হবে যে কোনও পণ্যের হঠাৎ চাহিদা বাড়ছে কি না। বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি। যে রাজ্যে হেলিকপ্টার অবতরণম করে, সেখানেও চেকিং হবে। রেল ও সড়কপথেও কড়া নজরদারি চালানো হবে।
১১ রাজ্যের নির্বাচনে ৩৪০০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন আটকানো হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে টাকার ব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করা যাবে না। সমস্ত এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী ডিউটিতে সরকারি কর্মীদের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কড়া নিয়ম। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ব্যবহার করা যাবে না নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও কাজে। নির্দেশ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের।
নির্বাচনে হিংসার কোনও জায়গা নেই। লোকসভা নির্বাচনে যেন রক্তগঙ্গা না বয়, তা নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের। অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা করা হবে। নির্দেশ জেলাশাসকদের।
প্রার্থীর অপরাধের ইতিহাস বা ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে, তাঁকে তিনবার সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক দলকেও জানাতে হবে, কেন অপরাধের ইতিহাস থাকা কাউকে প্রার্থী করা হল, অন্য কেউ কেন প্রার্থী হলেন না।
৮৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের কাছে ফর্ম পৌঁছে দেওয়া হবে। তারা বুথে না আসলে, বাড়ি গিয়ে ভোট গ্রহণ করা হবে।
এবারে বেড়েছে মহিলা ভোটারের সংখ্যা। ৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১২ রাজ্য এমন রয়েছে, যেখানে পুরুষ ভোটারের তুলনায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি।
৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন এবারের লোকসভা নির্বাচনে। ৪৯.৭ কোটি পুরুষ ও ৪৭.১ কোটি মহিলা ভোটার। নতুন ভোটার ১.৮২ কোটি। শতবর্ষের উপরে আয়ুর ভোটারের সংখ্য়া ২.১৮ লক্ষ। ট্রান্সজেন্ডার ভোটারের সংখ্যা ৪৮ হাজার। ৫৫ লাখ ইভিএমের ব্যবস্থা করা হবে।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, আগামী ১৬ জুন শেষ হচ্ছে চলতি লোকসভার মেয়াদ।
লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গেই জারি হবে আদর্শ আচরণবিধি।
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম ও অন্ধ্র প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের দিনও ঘোষণা করা হবে।