নয়া দিল্লি: ভারতে গর্ভ ধারণ ক্ষমতার হার নেমে এসেছে ২-এরও নীচে। সম্প্রতি ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনই দাবি করা হয়েছে। ১৯৫০ সালে ভারতে গর্ভ ধারণ ক্ষমতার হার যেখানে প্রায় ৬.২ ছিল,২০২১ সালে সেটা ২-এর থেকে কমে গিয়েছে। ওই গবেষণায় এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০৫০ সালে দেশে গর্ভ ধারণের হার ১.২৯ হয়ে যেতে পারে এবং ২১০০ সাল পর্যন্ত যেতে যেতে সেটা নেমে যেতে পারে ১.০৪-এ। শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বেই বর্তমানে গর্ভ ধারণ ক্ষমতার হারের এই নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গোটা বিশ্বের নিরিখে টোটাল ফার্টিলিটি রেট ১৯৫০ সালে যেখানে ছিল ৪.৫, ২০২১ সালে সেটা কমে হয়েছে ২.২। গবেষণার পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সালে তা ১.৮-এ নেমে আসতে পারে এবং ২১০০ সালে তা আরও কমে ১.৬ হয়ে যেতে পারে।
পপুলেশন ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার প্রধান পুনম মুতরেজার মতে, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে ভারতের ক্ষেত্রে ‘গভীর প্রভাব’ রয়েছে। তিনি মনে করছেন, বার্ধক্যের জনসংখ্যা, শ্রম-শক্তির ঘাটতি এবং সেই সঙ্গে সম্ভব্য সামাজিক ভারসাম্যের সমস্যার মতো চ্যালেঞ্জগুলি এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। পাশাপাশি এমন ইঙ্গিতও রয়েছে যে নিম্ন-আয়ের দেশগুলিতে চলতি শতাব্দীতেও গর্ভধারণ ক্ষমতার হার তুলনামূলকভাবে বেশির দিকেই থাকবে। গোটা বিশ্বের জনস্বাস্থ্যের নিরিখে এই গবেষণার তথ্য যে যথেষ্ট উদ্বেগজনক, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সেক্ষেত্রে পুনম মুতরেজার মতে, এমন কিছু আর্থিক নীতি যা উন্নতির দিশা দেখাবে, যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে, যেখানে সামাজিক সুরক্ষা ও পেনশনের সুবিধা থাকবে, তা এই আশঙ্কা ঠেকানোর জন্য সকলকে গ্রহণ করা দরকার। উল্লেখ্য, ল্যানসেটে প্রকাশিত ওই গবেষণায় এও উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০২১ সালে গোটা বিশ্বে ১২.৯ কোটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। ২০০৯ সালে যা ছিল ৯.৩ কোটি। তবে ২০২১ সালের পরিসংখ্যান আবার ২০১৬ সালের থেকে কম। ২০১৬ সালে গোটা বিশ্বে ১৪.২ কোটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। ভারতের ক্ষেত্রে ১৯৫০ সালে জন্ম হয়েছিল ১.৬ কোটি শিশুর, ২০২১ সালে সেটা বেড়ে হয়েছিল ২.২ কোটি। গবেষণার পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সালে সেটা আবার কমে ১.৩ কোটিতে নেমে যেতে পারে।