মুম্বই: রাজ্যে সংক্রমণ (COVID-19) নিয়ন্ত্রণে আনতে বিধিনিষেধের (Restrictions) উপরই ভরসা রাখল মহারাষ্ট্র সরকারও (Maharashtra Government)। দৈনিক আক্রান্ত ৪০ হাজার পার করতেই মহারাষ্ট্রে ফিরল বিধিনিষেধ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৪৩৪ জন। একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো বেড়ে দাঁড়াতেই তাই রাজ্যে ঘোষণা করা হল একাধিক বিধিনিষেধের।
রাজ্যে সংক্রমণের গতি উর্ধ্বমুখী হতেই কয়েক দফা বৈঠকে বসেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। বাণিজ্যনগরী মুম্বই বা গোটা রাজ্যেই লকডাউন (lockdown) হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্তও তিনিই নেবেন। অবশেষে শনিবার রাজ্যে আরও কড়া বিধিনিষেধ জারি করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আবার করোনার ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করার মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি আমরা। করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা না করে আসুন আমরা একে অপরকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করি। সকলের কাছে আমার অনুরোধ টিকা নিন, কারণ সংক্রমণ রুখতে সবথেকে কার্যকরী উপায় এটাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অহেতুক ভিড় জমানো রোধ করতে চাই, তবে লকডাউন জারি করতে চাই না। সত্যিটা হল যদি করোনাবিধি অনুসরণ না করা হয়, তবে কোনও বিধিনিষেধই কাজ করবে না। আমি সকলকে সতর্ক থাকতে বলছি। যদি উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।”
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, যখন দৈনিক মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদা ৮০০ মেট্রিক টন পার করবে কিংবা হাসপাতালের ৪০ শতাংশ বেডই করোনা রোগীতে পূর্ণ হয়ে যাবে। গতকাল রাজ্যের তরফে নয়া নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, ৫ জনের বেশি জমায়েত কোনও ভাবেই করা যাবে না। গণপরিবহনে একমাত্র টিকাপ্রাপ্তরাই উঠতে পারবেন। এছাড়া রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজও আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি অবধি বন্ধ থাকবে।
শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্সগুলিতেও কেবল ৫০ শতাংশের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা অবধি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৫০ শতাংশ দর্শক সংখ্যা সিনেমা হলেও জারি করা হয়েছে, সেখানে প্রথম ও শেষ শো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য়ে সমস্ত সেলুন, স্পা, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্সগুলি পুরোপুরি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিসগুলিতে কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে কাজের সময় হ্রাস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি অফিসগুলিতে একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিয়েবাড়ি বা অন্যান্য কোনও সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় জমায়েতের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। অন্তেষ্টির জন্য সর্বাধিক ২০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন।
মুম্বইতেও আলাদাভাবে জমায়েত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।