অমৃতসর: ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হবেন, কিন্তু সভাপতির পদটুকুও রইল না আর। পঞ্জাব সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ভরাডুবির পরই মঙ্গলবার কংগ্রেসের অন্তর্লবর্তীকালীন সভাপতি সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) নির্দেশ দিয়েছিলেন পঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরের কংগ্রেস সভাপতিরা যেন নিজেদের পদ থেকে ইস্তফা দেন। দলনেত্রীর নির্দেশ মেনেই আজ সকালে পঞ্জাবে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নভজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। বিদ্রোহের সুর না উচিয়ে, মাত্র এক লাইন লিখেই নিজের ইস্তফা পত্র (Resignation Letter) জমা দেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।
এদিন সকালেই সনিয়া গান্ধীকে এক লাইনের একটি চিঠিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আজ থেকে আমি পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলাম”। টুইটারে সেই চিঠির ছবি পোস্ট করেন সিধু। উপরে ফের এক লাইন- কংগ্রেসের সভাপতি যেমন চেয়েছিলেন, তার ইচ্ছেমতোই আমি ইস্তফাপত্র পাঠালাম।
উল্লেখ্য, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরই দলের অন্দরে পরিবর্তনের দাবি নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতারা। এরপরই তড়িঘড়ি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। সেখানে সভাপতি পদে ফের একবার সনিয়া গান্ধীকেই পুনর্বহাল করা হয় সকলের সম্মতিক্রমে। তবে নির্বাচনের এই ভয়ঙ্কর ফলাফলের কারণে দলীয় কর্মীদের মনে যে ক্ষোভ জমেছে, তা বুঝতে পেরেছিলেন সনিয়া গান্ধী। এরপরই মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা তথা মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা জানান যে, কংগ্রেসনেত্রী পাঁচ রাজ্যের সভাপতিকেই ইস্তফা দিতে বলেছেন।
তিনি টুইটে লেখেন, “কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, গোয়া ও মণিপুরের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিদের ইস্তফা জমা দিতে বলেছেন নতুন করে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি গঠনের জন্য।”
As desired by the Congress President I have sent my resignation … pic.twitter.com/Xq2Ne1SyjJ
— Navjot Singh Sidhu (@sherryontopp) March 16, 2022
পাঁচ রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পঞ্জাবেই শাসক দল হিসাবে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই এবারের নির্বাচনে কংগ্রেসের তরী ডুবে যায়। বিরোধের মূলেই ছিলেন নভজ্যোত সিং সিধু। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে বিরোধ শুরু হয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের। গতবছরের সেপ্টেম্বর মাসে চরমে ওঠে সেই বিরোধ, বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অমরিন্দর সিং।
ক্যাপ্টেনের ইস্তফার পর সিধুই মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে মনে করা হলেও, শেষ অবধি নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দলিত শিখ নেতা চরণজিৎ সিং চন্নিকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু চন্নি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফের একবার সিধু বিদ্রোহ শুরু করেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফাও দেন তিনি, যদিও দলের তরফে সেই ইস্তফা গ্রহণ করা হয়নি।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরও দল ও নিজের পরাজয়কে মাথা পেতে নিয়ে সিধু বলেছিলেন, “পঞ্জাবের মানুষ দারুণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং আম আদমি পার্টিকে ক্ষমতায় এনে”। অমৃতসর পূর্ব আসন থেকে সিধু এবার নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছিলেন, কিন্তু আম আদমি পার্টির জীবনজিৎ কৌরের কাছে ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।