নয়া দিল্লি : পরিবহন মন্ত্রক লেহ লাদাখে রাস্তার কাজে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় করেছে। এদিন লোকসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় খোদ কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি একথা জানিয়েছেন। তিনি এদিন হায়দরাবাদ ভিত্তিক সংস্থা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিমিটেড (MEIL) এর প্রশংসা করেছেন। লেহ লাদাখে রাস্তার কাজে টেন্ডার পেয়েছিল হায়দরাবাদের এই সংস্থা। এই সংস্থা খুব কম খরচে এই টেন্ডার নিয়েছিল। এর ফলে রাজ্য সরকার লাভবান হয়েছে। কাশ্মীরের জোজিলা পাস প্রকল্পের অগ্রগতির কথা বলতে গিয়ে তিনি মেইলের প্রশংসা করেন।
ভারতের নির্মাণ সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিমিটেড বা মেইল। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর কাশ্মীর উপত্যকাকে লাদাখের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য সব আবহাওয়ায় ব্যবহার উপযোগী জোজিলা পাসের প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয় মেইলকে। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৩২ কিলোমিটার এবং এটি দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রকল্পের ১৮ কিলোমিটারের প্রথম অংশটি সোনমার্গ এবং তালতালকে যুক্ত করে। এখানে রয়েছে একটি প্রধান সেতু এবং জোড়া টানেল। টানেল টি-১ এর মধ্যে দুটি টিউব রয়েছে। প্রবেশ পথ নির্মাণের পর মেইল ২০২১ সালের মে মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করে। হিমালয়ের পার্বত্য এলাকায় টানেল করা সবসময়ই এক কঠিন কাজ। কিন্তু মেইল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাবতীয় নিরাপত্তা, গুণমান বজায় রেখে দ্রুত গতিতে উভয় টানেলের কাজ করছে। তাই সেই কাজের প্রশংসাও পেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর থেকে।
এই প্রকল্পের জন্য় ১২ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছিল সরকারের তরফে। বিভিন্ন দেশি সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি নির্মাণ সংস্থাকেও এই টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। তবে কম খরচে হায়দরাবাদের এই নির্মাণ সংস্থা মেইল এই প্রকল্পের আবেদন করায় শেষে মেইলই এই প্রকল্পের দায়িত্ব পায়। কম খরচে, নির্দিষ্ট সময়ে গুণগত মান বজায় রেখে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য লোকসভায় নীতিন গড়করি মেইলের প্রশংসা করলেন।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের (NHIDCL) এই প্রকল্প সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব পালন করছে মেইল। এই প্রকল্পটির মাধ্যমে শ্রীনগর এবং লাদাখের মধ্যে কোনও সড়ক যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে কোনওরকম প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বাধা ছাড়াই সারা বছর সড়ক পথে যুক্ত রাখা যাবে শ্রীনগর ও লাদাখকে। জোজিলা টানেলকে মোট তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে – নীলগ্রার ১ ও ২ এবং জোজিলার মূল টানেল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৫২৮ মিটার উঁচুতে তুষারপাত এবং তুষারঝড়ের মতো প্রতিকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও দ্রুত গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মেইল।