নয়া দিল্লি: সীমান্তে অস্ত্র হাতে হাজির সেনাবাহিনী। যেকোনও মুহূর্তেই যুদ্ধ বাধতে পারে রাশিয়া (Russia) ও ইউক্রেনের (Ukraine) মধ্যে। প্রতিবেশী দেশের উপরে আচমকাই চড়াও হওয়ায় পশ্চিমী দুনিয়ার সমালোচনার শিকার হতে হচ্ছে রাশিয়াকে, পাশে পেয়েছে বেজিংকে। ভারত কোনও পক্ষই না নিয়ে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানের বার্তা দিয়েছে। আর ভারতের এই অবস্থানেই খুশি রাশিয়া। ভারতে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাসের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জে “ভারসাম্যমূলক, নীতিযুক্ত ও স্বাধীন অবস্থান”কে স্বাগত জানানো হয়েছে। ইউক্রেনে মিনস্ক চুক্তি লাগু করার প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবারই ভারতের তরফে বলা হয়েছিল যে, এই মুহূর্তে শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক কূটনীতির প্রয়োজন। যে পদক্ষেপে দুই তরফেই উত্তেজনা বা অশান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, তা এড়িয়ে চলাই প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য।
রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া-ইউক্রেনের বিরোধ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন, এই বার্তাই দিয়েছে ভারত। রাশিয়ার তরফে এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে টুইটও করা হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের বক্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করে বলা হয়, “আমরা ভারতের স্বাধীন, ভারসাম্যমূলক ও নীতিযুক্ত অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি জানান, মিন্সক চুক্তি লাগু করার যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তাকে ভারতের তরফে স্বাগত জানানো হচ্ছে। নরম্যান্ডি ফরম্যাটের অধীনে রাশিয়া, জার্মানি, ইউক্রেন ও ফ্রান্সকে নিয়ে যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলা হয়েছে, তাই-ই প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে ভারতের তরফে বলা হয়, দুই পক্ষেরই উচিত শান্তিপূর্ণভাবে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই চুক্তি লাগু করার পূর্ণ প্রচেষ্টা করা উচিত। ভারতের তরফে প্যারিস ও বার্লিনের মধ্যে নরম্যান্ডি ফরম্যাটে যে আলোচনা হয়েছে, তাকেও স্বাগত জানায় ভারত।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন সরকার ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধে ইতি টানতেই মিন্সক চুক্তি করা হয়েছিল। এই চুক্তি এখনও অবধি চালু হয়নি কারণ রাশিয়ার দাবি, তারা বিরোধের অংশই নয় এবং যে অংশগুলি নিয়ে সমস্যা রয়েছে, সেখানে মিলিটারি মোতায়েন রয়েছে।
ভারতের প্রতিনিধি তিরুমূর্তি বলেন, “ভারত চায় যে সেনা প্রত্য়াহার নিয়ে দ্রুত সমাধান হোক। সমস্ত দেশের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দুই দেশেই বসবাসকারী ভারতীয়দের সুরক্ষাই আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।”
ইউক্রেনের সীমান্তে বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েনের জন্য রাশিয়ার কড়া সমালোচনা করেছে আমেরিকার মতো বড় পশ্চিমী দেশগুলি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাফ জানিয়েছেন যে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে আমেরিকা ইউক্রেনেরই পক্ষ নেবে। অন্যদিকে, রাশিয়ার তরফে সেনা প্রত্য়াহারের কথা জানানো হলেও, ব্রিটেন সরকার বৃহস্পতিবারই সতর্ক করে বলা হয়েছে, যে পরিমাণ সেনা প্রত্য়াহার করেছে রাশিয়া, তা ন্যূনতম।