নয়া দিল্লি: বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুইয়ের ঘটনা (Bagtui Massacre) নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলার শাসকদল তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই বীরভূমের বগটুই গ্রামে ১০ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুরাও ছিল বলেই জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই লোকসভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরি বিষয়টি উত্থাপন করেছেন এবং বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বগটুই গ্রামের এই ঘটনার পর তড়িঘড়ি সিট গঠন করে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হলেও বীরভূমের এই গ্রাম নিয়ে শাসকদলের অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কাল সেখানে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। এবার এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করতে চলেছে তৃণমূল সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল। ইতিমধ্যে দলের তরফে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে সময় চেয়েছেন। জানা গিয়েছে, যে কোনও মুহূর্তে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হতে পারে তৃণমূল সাংসদের।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে ক্রমাগত দাবি করা হচ্ছে, দলীয় কোন্দলের ফলেই ১০ জনকে বোমা মেরে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে (যদিও রাজ্যের ডিজি মনোজ মালব্যের দাবি এই ঘটনায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে)। এমনকী রাজ্য প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ সেই দাবিও করা হয়েছে। সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই জাতীয় যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করবেন পতিনিধি দলের সদস্যরা। তৃণমূল সাংসদরা সম্ভবত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাবেন, এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে কোনও দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল নেই। পারিবারিক কারণেই বীরভূমে এই হত্যালীলা চলেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন, এবং সিট গঠন করা হয়েছে এই তথ্যও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরতে পারেন তৃণমূল সাংসদরা। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেই কথাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হবে।
অমিত শাহের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদদের এই সাক্ষাৎ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। উত্তর প্রদেশ, নাগাল্যান্ড থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী ঘটনাস্থলে সাংসদদের প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছিলেন। এই ঘটনা রাতারাতি জাতীয় স্তরে উঠে এসেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা মমতা ও তাঁর প্রশাসনকে ছেড়ে কথা বলবে না। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি দলেরও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। তাই আগে ভাগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিজের সাংসদদের পাঠিয়ে বিরোধীদের রাজনৈতিক অস্ত্র ভোঁতা করতে চাইলেন মমতা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।