কলকাতা: ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এক ৬ বছরের নাবালিকার দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয় কলকাতার তিলজলায়। অভিযোগ ওঠে, যৌন নির্যাতন করে খুন করা হয় ওই শিশুকে। শুধু তাই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করতে শিশুর মাথায় হাতুড়ি মারা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় এবার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল আলিপুর আদালত। মৃত শিশুর প্রতিবেশী অলোক কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। বুধবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। বৃহস্পতিবার তাঁর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ৪৫ জন সাক্ষী দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
গত বছরের মার্চ মাসে শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে। হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় তিলজলার ওই শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয় তিলজলায়।
অলোক কুমার নামে ওই ব্যক্তি তিলজলা থানা এলাকার শ্রীধর রায় রোডেরই বাসিন্দা। তাঁর ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল দেহ। পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় এবং পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
কী বলল আদালত?
বুধবার আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালত অলোক কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করে। অপহরণ, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক যৌন নির্যাতনের মতো অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ শুনে বিচারক বলেন, আপনি নিষ্ঠুরতম কাজ করেছেন, নিজের বিকৃত লালসা মিটিয়েছেন। বিচারক উল্লেখ করেন, পুলিশ সব অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। যে ৪৫ জন সাক্ষী দিয়েছেন, তাঁরা অলোক কুমারের বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিচারক আরও বলেন, “নিজের যৌন লালসার জন্য জোর করে ঘরে ঢোকানো হয় শিশুকে। দেওয়ালে মাথা ঠুকে, দুধরনের হাতুড়ি ব্যবহার করেন মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।” পুরো ঘটনাকে নৃশংস অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন বিচারক।
অভিযুক্তের উদ্দেশে বিচারক বলেন, “আপনি একজন ডেলিভারি বয়। আপনারা গায়ে অনেক শক্তি। আপনি এক অসহায় বাচ্চার সঙ্গে যা করেছেন, তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নেই। আপনি অমানবিক নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, এই ধরনের অপরাধ খুব একটা দেখা যায় না। আপনারা উদ্দেশ্য ছিল, অপরাধ করে পালিয়ে যাওয়া। আপনাকে সংশোধনাগারে পাঠিয়ে সংশোধন করা যাবে না। এই অপরাধ বিরল নয়, বিরলতম, সাংঘাতিক ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড।”