কলকাতা : বিধানসভা নির্বাচনের মাস কয়েকের মধ্যে সামনে এসেছে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব। রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন একাধিক নেতা। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়েক নাম। উত্তরাখণ্ডে দলের দায়িত্বে থাকায়, ভোটের আগে সেখানেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। আর এবার কলকাতা ফেরার পর তাঁকে বারবার দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে। পুরভোটের ফল নিয়ে আত্মসমীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন তিনি। আর এবার বিক্ষুদ্ধ নেতাদের সঙ্গে ‘গোপন’ বৈঠকে বসতে দেখা গেল তাঁকে। সায়ন্তন বসুর বাড়িতে সেই বৈঠক বসেছিল বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, লকেটের এই বৈঠক নিয়ে কিছুই জানে না রাজ্য নেতৃত্ব। কার্যত বঙ্গ বিজেপিকে অন্ধকারে রেখেই হয় এ দিনের বৈঠক। তবে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের অনুমোদনেই এই বৈঠক হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিক্ষুব্ধ নেতাদের ক্ষোভের কারণ ঠিক কী, তা জানার চেষ্টা করেননি কেউ। দলের এত পুরনো নেতারা কেন দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন, তা জানতেই নাকি এই বৈঠকে বসেছেন লকেট। এই বৈঠক যে রাজ্য নেতৃত্ব খুব একটা ভালো চোখে দেখবে না, তেমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
রাজ্য নেতৃত্বের ফাটল প্রকাশ্যে এসেছে আগেই। ক্ষোভ প্রকাশের জেরে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো নেতাকে। সবাই একসঙ্গে থেকে যে কাজ করছেন না, তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও নজর এড়ায়নি। শুধু তাই নয়, উত্তরাখণ্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে লকেটকে বাংলার বিজেপির অবস্থার কথাও জানিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর। তাই রাজনৈতিক মহলের অনুমান, দিল্লির কথাতেই বৈঠকে বসেছেন লকেট। কী কীরণে ক্ষোভ বাড়ছে, তা জানতে চেয়েছেন তিনি।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কার্যকলাপ যে লকেট খুব একটা পছন্দ নয়, তা আগেই প্রকাশ হয়েছে লকেটের বক্তব্যে। সম্প্রতি বিজেপির চিন্তন বৈঠকে লকেটের দাবি, পুরভোটে সন্ত্রাস হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অনেক পুরসভায় সন্ত্রাস হয়নি, ছাপ্পাও হয়নি। সেখানে কেন বিজেপি তৃতীয় স্থানে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন লকেট। কারণ খুঁজে বের করার কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কাজের লোককে দায়িত্ব দিতে হবে। নিজেরা বলবেন, কিন্ত কাজের লোককে বাদ দিয়ে কাছের লোককে খুঁজবেন।’
আর লকেটের মন্তব্যের জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যাঁরা ময়দানে নেই, তাঁরা যদি এই ধরনের অভিযোগ করেন তাহলে কী হবে? যারা ময়দানে ছিলেন তাঁরা জানেন কত কঠিন লড়াই করাটা।