কলকাতা : বিজেপির বুথ সভাপতির মৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য পুলিশের ওপর ভরসা নেই বলে মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই ময়নাতদন্ত করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই বলে আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। সূত্রের খবর, তমলুক থেকে দেহ আনা হচ্ছে কলকাতায়। বুধবার বিকেল ৪ টের পর কমান্ড হাসপাতালে হবে ময়নাতদন্ত।
হাইকোর্টের আরও নির্দেশ, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চার সপ্তাহের জন্য মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলায় রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। পূর্ব মেদিনীপুরে ময়নায় বিজেপির বুথ সভাপতিকে অপহরণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়্যা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার থেকেই উত্তপ্ত ময়না। বুধবার বনধ ডাকা হয়েছে বিজেপির তরফে।
মামলাকারীর আইনজীবী সৌরভ চট্টোপাধ্য়ায় এদিন আদালতে দাবি করেন, ওই এলাকায় ১০০টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় এক বছরে। এরা প্রত্যেকেই বিজেপি সমর্থক বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। আইনজীবী আরও দাবি করেন, পুলিশ অপরাধীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। ময়না থানাতেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পুকুরে দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তাম্রলিপ্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যুর কথা জানা যায়। বিচারকের সামনে পোস্টমর্টেম হয়। দেহে গুলি পাওয়া গিয়েছে। পরিবার দেহ নিতে চায়নি।’ ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু লুকনোর নেই। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছে রাজ্য। এদিন আদালতে এসে মৃত বিজেপি নেতার দিদি বলেন, ‘আমাদের রাজ্য পুলিশের ওপর কোনও ভরসা নেই। ওদের সামনেই সব কিছু হয়েছে। তারপরও ওরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’
উল্লেখ্য, প্রথমবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গুলিতে মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশে খুশি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আরও একবার আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য। এই নির্দেশের ফলে অপরাধীদের ধরতে সুবিধা হবে। পুলিশ তার কর্তব্য পালন করতে পারেনি।’ পুলিশ সুপারের অপসারণ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, খুন হচ্ছে কেন? শুধু ময়না নয়, এরকম ঘটনা সব জায়গায় ঘটছে।