কলকাতা: সরকারি জমি দখলকে করে বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণের খবর মাঝেমাঝেই সামনে আসে। অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারি জমিতে মন্দির বা মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এবার সরকারি জমিতে ‘অবৈধ’ ধর্মীয় নির্মাণ সরাতে কড়া অবস্থান নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকার। নবান্নের (Nabanna) তরফে ৮ জেলার জেলাশাসককে লিখিত আকারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অবিলম্বে সরকারি জমি থেকে ‘অবৈধ’ ধর্মীয় নির্মাণ সরিয়ে ফেলে নবান্নে রিপোর্ট পাঠাতে। ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Govt Of West Bengal) সদর দফতর নবান্ন থেকে এই মর্মে জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে। নির্দেশিকাতে দেখা গিয়েছে, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব বর্ধমানের মতো জেলাগুলির উল্লেখ রয়েছে। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, সেই কথা মাথায় রেখেই সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসনকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, বিভিন্ন জেলায় সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ গজিয়ে ওঠার কারণে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছে। অবৈধ নির্মাণের কারণে রাস্তা সম্প্রসারণ, বিভিন্ন সরকারি নির্মাণের কাজ ব্যহত হচ্ছে। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ সরকারি উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল সরকারের কাছে। শেষমেশ কঠোর সিদ্ধান্তের পথেই হাঁটল সরকার। বাম আমলে ২০১০ সালে প্রকাশিত হওয়া সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী “সরকারি জমিতে কোনও অবৈধ নির্মাণকে অনুমোদন দেবে না সরকার। রাজ্য, সরকারি দফতর এবং পঞ্চায়েত বা পৌরসভাগুলির মত স্থানীয় প্রশাসনিক সংস্থাগুলিকে এই ধরনের নির্মাণ রুখতে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ একবার নির্মাণ হয়ে গেলে জনগণ তা গ্রহণ করে নেবে। যে সরকারি বিভাগে জমি, সংশ্লিষ্ট বিভাগকেই ওই জমি খালি করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, এই নির্মাণগুলির যদি কোনও উপযুক্ত কারণ না থাকে তবে নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলা হবে। বাম আমলে নেওয়া সেই নীতিকে মান্যতা দিয়েই নবান্নের তরফে জেলাশাসকদের কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরের সিনিয়র বিশেষ সচিব নির্মাল্য সরকারের সই করা নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই জেলাশাসকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশিকা প্রতিলিপি রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজিকে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের সরকারি জমি দখলমুক্ত করার জন্য জেলাশাসকদের সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি জমির দখলমুক্ত করার কাজ কতদূর এগিয়েছে তা জানিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখের মধ্যে সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।