কলকাতা: রবিবার সাত সকালে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে সিবিআই। গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে রাত কার্যত সিবিআই দফতরে বসে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। দুর্নীতির অভিযোগে কার্যত সাঁড়াশি চাপে রয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। হাইকোর্ট যাঁকে ‘পাওয়ারফুল লোক’ বলে সম্বোধন করেছে, সেই সন্দীপ আসলে কতটা ‘পাওয়ারফুল’? আরজি করে কেমন প্রভাব ছিল তাঁর? মেডিক্যাল কলেজের এক প্রাক্তন কর্মী বলছেন, ‘সন্দীপ ঘোষ ছিলেন আরজি করের মুখ্যমন্ত্রী।’ নিজেকে নাকি তেমনটাই মনে করতেন তিনি!
আরজি করের মর্গে দীর্ঘদিন ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেছেন তারক চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা চোখের সামনে দেখেছি। আর সন্দীপ ঘোষকে গুণ্ডা সর্দার বললেও ভুল হবে না। মর্গ থেকে ফার্মেসি- সব জায়গায় চলত দুর্নীতি। ভাল ডাক্তার হলেও, ওঁর পছন্দ না হলে বদলি করে দিতেন।”
প্রাক্তন ওই কর্মীর দাবি, হাসপাতালের গেটে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে মর্গ পর্যন্ত নিজস্ব একটা ‘সেট আপ’ তৈরি করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ। অর্থাৎ তাঁর কথামতোই সবটা চলত বলে দাবি করেছেন তারক। তাঁর কথায়, ‘সুইপার টু সুপার- সবাইকে নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ।’
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)
শুধু কাজেকর্মে নয়, হাবেভাবেও যেন মুখ্যমন্ত্রীই ছিলেন সন্দীপ। তারক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁর লোকজন বলতে শুরু করেছিল, উনি আরজি করের মুখ্যমন্ত্রী। চারস্তরীয় নিরাপত্তা পেরিয়ে যেতে হত সন্দীপ ঘোষের কাছে।” প্রাক্তন কর্মীর দাবি, শুধু পুলিশ নয়, নিজের নিরাপত্তার জন্য ব্যক্তিগত বাউন্সারও রেখেছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ। সন্দীপের চালচলন বর্ণনা করতে গিয়ে তারক চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, “উনি যখন ঢুকতেন, তখন আগে ৩-৪ জন থাকত। তারা বলত, সরে যান সরে যান… । ঠিক যেন মুখ্যমন্ত্রী ঢুকছে।”
শুধু মর্গের প্রাক্তন কর্মী নন, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলিও একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তারপরও কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে আরজি করে তরুণী চিকিৎসকে মৃত্যুর পর সন্দীপ ঘোষকে যেভাবে অন্য মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ দেওয়া হয়, তা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। আপাতত সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। পলিগ্রাফ টেস্টও হবে তাঁর।