কলকাতা: সব জল্পনা অবসান। তৃণমূল ভবনে ফিরল সেই পুরনো ছবি। পাশাপাশি আসনে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়। শুরুতেই মমতা বললেন, ‘মুকুল আমাদের ঘরেরই ছেলে। ঘরে ফিরল।’
সভাঘরে মুকুল রায় ও শুভ্রাংশুকে উত্তরীয় পরে দলে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাঘরে উপস্থিত রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম-সহ দলের প্রথম সারির সব নেতারা।
দলে ফিরেই মমতাকে নেত্রী মানলেন মুকুল রায়। প্রত্যাবর্তনের পর প্রথমেই তিনি বললেন, ‘আজ এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। পুরনো সব ছেলেদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’ তিনি জানান, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেরই বাংলা আবার তার নিজের জায়গায় ফিরে যাবে। মুকুলের কথায়, ‘যিনি আমাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন, তিনি আর কেউ নন, ভারতবর্ষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ কেন তিনি বিজেপি ছাড়লেন? কেন যোগ দিলেন তৃণমূলে? সেই বিস্তারিত বিবৃতি লিখিত আকারে দেবেন বলে জানালেন মুকুল রায়।
বিজেপিতে মুকুল ভাল ছিলেন না: মমতা
মমতা বললেন, ‘দল আগে থেকেই শক্তিশালী ছিল। আমরা বিপুল জয়ও পেয়েছি। কিন্তু মুকুল পুরনো ছেলে। বিজেপিতে মুকুল ভাল ছিল না। ওর শরীরও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।এখানে এসে মুকুল শান্তি পাবে।’ বিজেপিতে মুকুলকে এজেন্সির ভয় দেখানো হচ্ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা। তাঁর দাবি, বিজেপি নির্দয় দল। তাই বিজেপি করা যায় না। মমতার কথায়, ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’ অর্থাৎ পুরনো দলই ভাল, তাই ফিরে এসেছেন মুকুল।
‘গদ্দারদের ফেরানো হবে না: মমতা’
তৃণমূল সুপ্রিমো সাফ জানালেন ভোটের সময় যারা গদ্দারি করেছে, তাদের দলে ফেরানো হবে না। মমতা বলেন, ‘মুকুল দল বদল করলেও ভোটের সময় আমাদের দলের নামে একটাও খারাপ কথা বলেনি।’ কিন্তু ভোটের সময় যারা তৃণমূল সম্পর্কে কটূ কথা বলেছে তাদের ফেরানো হবে না। এ ক্ষেত্রে ‘নরমপন্থী’ ‘চরমপন্থী’ তত্ত্বের কথা ফের বললেন মমতা। মুকুলকে ফেরানো হলেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালী গুহ সম্পর্কে মুখ খুলতে রাজি নন তিনি। মুকুলের সঙ্গে যে কোনোদিনই মতবিরোধ ছিল না, সেটাও সাফ জানালেন মমতা।
‘এজেন্সিগুলো বিজেপি মুখপাত্র’
মুকুলের দলবদলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে ফিরে সামনে আসছে সারদা-নারদা প্রসঙ্গ। আর সেই প্রশ্নের জবাবে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, এটাই ফাইনাল। বিজেপি যা করে আমরা তা করি না। ভয়ে নয়, নিজের ইচ্ছেয় ফিরে এসেছে মুকুল। বিজেপি সাধারণ মানুষের দল নয়, জমিদারদের দল, এজেন্সির দল। এজেন্সিগুলো বিজেপির মুখপাত্র।
‘আরও অনেকেই আসবে’
দলবদলের তালিকায় যে অনেক নামই জুড়বে, এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। সেই জল্পনা উস্কে মমতা জানালেন আরও অনেকেই আসবে। কবে আসবে, সেটা জানিয়ে দেবেন তিনি। তবে কারা আসবে সে ব্যাপারে কিছু খোলসা করেননি, তাঁরা কোন স্তরের নেতা, সেটাও খুলে বললেন না। শুধু বললেন, যারা ভদ্র ব্যবহার করেছে, তাঁদেরকেই ফিরিয়ে নেওয়া হবে।