কলকাতা : বোলপুরে মুকুল রায় যা বলেছেন তাতে দল অনুমোদন দেয় না। উনি শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। উনি ভারসাম্যহীন। বোলপুরে মুকুল রায়ের মন্তব্যের পর এমনটাই জানালেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, উনি ভারসাম্যহীনভাবে কথা বলছেন। এই বক্তব্যের সঙ্গে দল সহমত পোষণ করে না। তিনি মনে করলে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির দায়িত্বও ছাড়তে পারেন, এমনটাই জানিয়েছেন পার্থ।
শুক্রবার বোলপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুকুল রায় বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে সারা পশ্চিমবাংলা জুড়ে জয়ী হবে ভারতীয় জনতা পার্টি।’ শুধু তাই নয়, তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।’
এই মন্তব্যের পর দলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘উনি শারীরিকভাবে সুস্থ নন। ভারসাম্যহীনভাবে কথা বলছেন। ওনার সুস্থতার কামনা করি।’ পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘দল তাঁর কথায় সহমত পোষণ করে না। উনি দলের কোনও পদেও নেই।’ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে, এমন কথাও জানান পার্থ। তিনি বলেন, ‘ওনার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে, উনি যদি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে না থাকতে চান, তাহলে দল বিচার করবে।’
বীরভূমে যে বিকল্প পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে অংশ নিতেই বোলপুরে গিয়েছিলেন বিধায়ক মুকুল রায়। আজ শুক্রবার সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে মেলা প্রাঙ্গনের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন মুকুল। কলকাতার পর এবার রাজ্যের অন্য়ান্য জায়গায় পুর নির্বাচন আসন্ন। সে সব নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের কী রণকৌশল, সেই প্রশ্নই রাখা হয়েছিল মুকুলের কাছে।
প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চেনা হাসি হেসে মুকুল বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে সারা পশ্চিমবাংলা জুড়ে জয়ী হবে ভারতীয় জনতা পার্টি।’ তাঁর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই হকচকিয়ে যান আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনিও কার্যত অপ্রস্তুতে পড়ে যান। পাশ থেকে তৃণমূল নেতারা মুকুলের ভুল শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি নিস্পৃহ ছিলেন। পিছনে তাকিয়ে মুকুল গলার স্বর নামিয়ে বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।’ তাঁর এই দ্বিতীয় মন্তব্য নিয়েও তৈরি হয়েছে আরও এক জল্পনা।
তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের কিছুদিন পরই মুকুল রায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় গিয়ে বলেছিলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে। এই কৃষ্ণনগরে স্বমহিমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি। নিজের ক্ষমতায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি।” পরক্ষণেই তিনি ভুল বুঝতে পারেন। ওই ঘটনার দিন সাতেক পর আবার ‘ভুল’! তিনি বলেছিলেন, কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হলে তিনিই জিতবেন বিজেপির টিকিটে। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ালে কী হবে তা মানুষ ঠিক করবে! এই কথাটি আবার বলেছিলেন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই।
আরও পড়ুন: Fire at Bengal-Assam Border: বাংলা-অসম সীমান্তে ব্যাপক উত্তেজনা, দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন