কলকাতা: এসএসসি মামলা ছাড়লেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন। এসএসসি সংক্রান্ত দশটি মামলা থেকে তিনি সরে দাঁড়ালেন। ব্যক্তিগত কারণেই মামলা ছাড়লেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রবিবার রাতেই তার ইঙ্গিত মিলেছিল, যখন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন একটি নোটিস দিয়েছিলেন। নোটিসে তিনি এসএসসি সংক্রান্ত সমস্ত মামলাগুলিকে একটি লিস্টে রেখেছিলেন। মামলা চলাকালীন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। এসএসসি-র মামলা অনলাইনে চলাকালীন এক আইনজীবী মন্তব্য করেন, ‘সমস্ত কিছু কথা হয়ে গেছে। সেটাই হবে।’ পাশাপাশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও তাঁর নির্দেশে লিখেছিলেন, তাঁর হাত কোথাও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কারণ তিনি যখনও কোনও মামলায় সিবিআই নির্দেশ দিচ্ছেন, সেটিতে ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছে।
বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের মামলা থেকে সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, ” গ্রুপ ডি, গ্রুপ ডি নাইন, টেন- এই মামলাগুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা আর শুনবে না। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি আর তাঁর ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা শুনবেন না।”
প্রসঙ্গত, এসএসসি- নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। তবে একবার নয়, এর আগেও একাধিকবার মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু প্রত্যেকবারই ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয়ে যায় সেই নির্দেশ। বুধবার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রশাসনিক নির্দেশে তিনি লিখেছেন, “কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে? দেশ দেখুক, বিচার করুক, যে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া নিয়ে কী চলছে।”
এরপর এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইকে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মধ্যরাত পর্যন্ত সিবিআই-এর ম্যারাথন জেরার মুখে পড়েন প্রাক্তন এসএসসি কর্তা। পরেরদিন সকালেই তিনি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। প্রাক্তন উপদেষ্টা এসপিসিনহার বিরুদ্ধে কোন এফআইআর নয়, নির্দেশ দিয়ে দেন বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ মামলার জন্য নির্দিষ্ট বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চেই শুনানি ছিল। কিন্তু তার আগেই এই এসএসসি সংক্রান্ত ১০টি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন। এরপর মামলাটি কার ঘরে যাবে, সেটি ঠিক করবেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
আরও পড়ুন: Bagtui Massacre: স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগে গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করতে তৎপর সিবিআই