কলকাতা : ইউনেসকোতে স্বীকৃতি পেয়েছে দুর্গা পুজো। আর সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেছেন, ‘আমি ২০১৬ থেকে চেষ্টা করছিলাম।’ বাংলাকে বিশ্ব সেরা করে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পুরভোটের প্রচার মঞ্চ থেকে মমতার এই বক্তব্যের পরই পাল্টা জবাব দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, দুর্গা পূজার এই হেরিটেজ স্বীকৃতির কৃতিত্ব আসলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের।
আজ বৃহস্পতিবার ভাটিখানায় বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে এক পথসভায় এসে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পুজো করেন না, দুর্গা উৎসব করেন। কেন্দ্রীয় সরকার ইউনেসকোতে পাঠিয়েছিল, তাই দুর্গা পূজোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বিসর্জন পিছিয়ে দিয়েছিলেন রমজান মাসের জন্য।’
শুধু সুকান্ত মজুমদার একা নয়, বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে একই দাবি করা হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ‘২০১৯ সালেই সঙ্গীত নাটক আক্যাডেমি কলকাতার দুর্গা পূজাকে ইউনেসকোর ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ মর্যাদায় অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা মিনিস্ট্রি অফ কালচারাল, ভারত সরকারের অন্তর্ভুক্ত।’ বাংলাকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদও জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ২০১৬ থেকে দুর্গা পুজোকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে তৎপর ছিলেন তিনি। আজ পুরভোটের প্রচারে বাঘাযতীনে গিয়ে মমতা বলেন, ‘গতকাল যা পেয়েছি, আমার হৃদয় ভরে গিয়েছে। বাংলা বিশ্ব বাংলা হয়ে গিয়েছে। বাংলা বিশ্ব সেরা হয়ে গিয়েছে। আমি যখন বলছি, আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আপনাদের গায়েও নিশ্চয় কাঁটা দিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ২০১৬ থেকে চেষ্টা করছিলাম। পুজো কার্নিভাল মাথা থেকে বের করেছিলাম। ক্লাবগুলোকে আমরা ৫০ হাজার টাকা করে দিই। মমতার কথায়, আমাদের পুজো বর্ণময়, ছন্দময়, সংস্কৃতিময়।
শুধু তাই নয়। বিরোধীদের জবাব দিয়ে মমতা বলেন, ‘কেউ কেউ বলত মমতা দিদি দুর্গা পুজো করতে দেন না। আজ তাদের মুখে চুন-কালি পড়া উচিৎ। কারণ আজ দুর্গা পুজো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হয়ে গিয়েছে।’ প্রত্যেকের গর্ব করা উচিৎ বলে মন্তব্য় করেন তিনি। উল্লেখ্য, মমতার বিরুদ্ধে পুজোয় বাধা দেওয়ার অভিযোগ বারবার সামনে এনেছে বিজেপি।
১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হচ্ছে ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।”
আরও পড়ুন : KMC Election 2021: ‘তৃণমূল করে খাওয়ার জায়গা নয়, যদি কেউ ভাবে…’