কলকাতা: তাঁরা সন্তান হারিয়েছেন। নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে তাঁদের সন্তানকে। সন্তানহারা তিলোত্তমার বাবা-মাকে এবার নিশানা করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বললেন, চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন তিলোত্তমার বাবা-মা। তাঁরা কিছু গোপন করছেন কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন তৃণমূল নেতা।
শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য। এই নিয়ে দিন চারেক আগে তিলোত্তমার বাবা বলেছিলেন, “এত সক্রিয়তাই বা কেন! রায়ের কপি পড়ে উঠতে পারলাম না, ওঁরা মামলা করে দিলেন! এক মাস তো সময় ছিল।” মুখ্যমন্ত্রী গেম খেলছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “উনি তো বলেন খেলা হবে, সবসময় খেলা করছেন। এটাও খেলা। মুখ্যমন্ত্রী অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছেন। এটা একটা ভোট গেম তো বটেই।”
মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এই মন্তব্য করায় তিলোত্তমার বাবা-মাকে নিশানা করলেন কুণাল। তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ্য করছি, তিলোত্তমার বাবা-মা মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করছেন। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা রয়েছে। কিন্তু, তাঁরা চক্রান্তকারীদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের অবস্থান বদলাচ্ছেন। চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হয়ে গিয়েছেন তিলোত্তমার বাবা-মা।”
এখানেই না থেমে কুণাল বলেন, “আমাদের বিস্ময় লাগছে, মেয়ের মৃত্যুতে বাবা-মার বুক ভেঙে গিয়েছে। অথচ সেদিন থেকে স্নায়ু ধরে রেখে একেকদিন একেকরকম বিবৃতি দিয়ে যাওয়া, কী করে হতে পারে? আমরা কান্নার ছবি দেখতে পেলাম না। আমরা বুকফাটা আর্তনাদের যে ছবি দেখে থাকি, তাঁরা ইস্পাতকঠিনভাবে প্রথম দিন থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছেন। কখনও বলছেন, সিবিআই চাই। কখনও বলছেন, সিবিআই মানব না। বাড়িতে সব ঠিক ছিল কি না, তাঁরা কিছু গোপন করছেন কি না, সেগুলো তো এবার তদন্তে আসা উচিত।”
তিলোত্তমার বাবা-মাকে কুণালের অনুরোধ, “আপনাদের মন্ত্রণাদাতাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের শিখণ্ডী করে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাতজোড় করে বলছি, এই ফাঁদে পা দেবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে এই ধরনের কথা দয়া করে বলবেন না। আপনাদের জন্যই আপনাদের মেয়ের ধর্ষক-খুনির সাজা হয়নি। আপনারা চক্রান্তকারীদের হাতের পুতুল হয়ে একেকবার একেকরকম কথা বলছেন। এটা তদন্তে আসা উচিত। নানারকম কথা বলে নিজেদের গুরুত্ব কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। দয়া করে চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হয়ে উঠবেন না।”