কলকাতা: একদিকে রাজধর্ম পালনের নজির। অন্যদিকে জমি আন্দোলন দুর্বল করতে একের পর এক গ্রেফতারি। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান। সন্দেশখালির নন্দীগ্রাম হওয়া আটকাতে এটাই কি শাসকের কৌশল? উত্তম সর্দারের গ্রেফতারের পর এ নিয়েই এখন সন্দেশখালিতে তুঙ্গে জল্পনা। স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ প্রশমনে এবার পদ হারাতে পারেন শিবু হাজরাও। লোকসভা ভোটের আগে আন্দোলনে সামিল মহিলাদের বক্তব্য চাপ বাড়িয়েছে শাসকের। শাহজাহান কাণ্ডের পর মার্চে সরবেড়িয়া যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিরোধীরা। মহিলাদের সামনের সারিতে রেখে গত কয়েকদিনে আন্দোলনের মেজাজ দেখে ফেব্রুয়ারিতেই সন্দেশখালি যেতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবারই রাজভবনে রীতিমতো রণদেহী মেজাজে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২৪ ঘণ্টার ডেডলাইনও দিয়ে এসেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। পদক্ষেপ না করলে ১৪৪ ধারা ভেঙে সন্দেশখালি যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছেন।
আগামী সপ্তাহে রাজ্যপালেরও সন্দেশখালি সফরের কথা শোনা যাচ্ছে। সোমবার সন্দেশখালি কর্মসূচি বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়েরও। বিরোধীদের কৌশল ভাঙতে আন্দোলনের মূল দুই দাবির মধ্যে উত্তম সর্দারের গ্রেফতারি দাবিপূরণ হয়ে গিয়েছে। তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ডও করা হয় শনির সকালে। উত্তমের মতো শিবপ্রসাদ হাজরার ক্ষেত্রেও দল একই ব্যবস্থা নিতে পারে বলে সূত্রের খবর। তাই হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার যুক্তি দুর্বল হবে। সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসনের এই কৌশল যাঁরা দুর্বল করতে পারেন তাঁদের মধ্যে বিজেপির লোকসভার আহ্বায়ক বিকাশ সিংহ গ্রেফতার। সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দারের নাম অভিযোগপত্রের এক নম্বরে রয়েছে।
যদিও সন্দেশখালির আন্দোলনে বিধানসভার অন্য আটটি দ্বীপেও জনসমর্থন দানা বাঁধতে শুরু করেছে। জেলিয়াখালি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। খুলনা, মণিপুর, কোড়াকাটি, দুর্গামণ্ডপ অঞ্চলেও আন্দোলনের জমি প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৪৪ ধারা উঠলেই শিবু হাজরার পাশাপাশি শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে উত্তাল হতে পারে বিধানসভা এলাকা। লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালির আন্দোলনকে নন্দীগ্রামের উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাইছেন আন্দোলনকরীরা। আরও নির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে মার্চে লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণা পর্যন্ত সময় কিনতে চাইছেন বিক্ষোভকারীরা। ভোট ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হাতে গেলে ‘খেলা হবে’ বলে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন আন্দোলনকারীরা। এখন দেখার সময় কী বলে।