পুরাণ মতে, হিন্দু দেবতাদের মধ্যে শক্তির দেবী হলে দেবী দুর্গা। তিনি শক্তি, সুরক্ষা, বীরত্ব ও ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব হিসেবে সম্মানিত। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে প্রায় সব হিন্দু দেবতার একটি বাহন আছে। নন্দী হল ভগবান শিবের ষাঁড়, গণেশের বাহন হল ইঁদুর, কার্তিকের ময়ূর, লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, সরস্বতীর রাজহংস ও দেবী দুর্গার বাহন হল সিংহ। তবে নবরাত্রিতে দেবী দুর্গার নয়টি বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন বাহনের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। শৈলপুত্রী মাতা যেমন বৃষের উপর চড়াও হয়েছেন, তেমন কালরাত্রির বাহন হিসেবে দেখানো হয়েছে গাধা। প্রতিটি দেবীর বাহন আলাদ রূপে বোঝানো হলেও দেবী দুর্গার প্রধান ও মূল বাহন হল সিংহ।
১. পার্বতীর পুত্র কার্তিকের নাম স্কন্দ, এজন্য তাঁকে স্কন্দের মা বলা হয়। কাত্যায়নী দেবীকে সিংহের উপর চড়াও দেখানো হয়েছে। দেবী কুশমণ্ডা বাঘে উপর চড়েছেন। দেবী চন্দ্রঘণ্টাও বাঘের উপর আরোহণ করেছেন। অষ্টমী, শৈলপুত্রী, এবং মহাগৌরী বৃষভে চড়ে শক্তির প্রতীক হিসেবে বর্ণিত হয়েছেন। দেবী কালরাত্রি গাধায় চড়ে এবং সিদ্ধিদাত্রী পদ্মের উপর বসে আছেন।
২. পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী হাজার বছর ধরে তপস্যা করেছিলেন শিবকে তার স্বামী হিসাবে পেতে। তপস্যার কারণে দেবী অন্ধকারে মিশে যান। বিয়ের একদিন পর পার্বতীকে কালী বলে সম্বোধন করলে কৈলাস ত্যাগ করে ফের তপস্যায় মগ্ন হয়ে যান। সেইসময় দেবীকে শিকার করার ইচ্ছায় এক ক্ষুধার্ত সিংহ তার দিকে এগোতে শুরু করে। কিন্তু দেবীকে তপস্যায় মগ্ন দেখে সেখানেই চুপ করে বসে পড়ে।
সেই সময় বসে বসে সিংহ ভাবতে থাকে, দেবী যখন তপস্যা থেকে উঠবেন, তখন তিনি তাঁদের জন্য খাবার বানাবেন। এরমধ্যে অনেক বছর কেটে যায়। কিন্তু সিংহ তার নিজের জায়গা থেকে নড়ে না। এদিকে দেবী পার্বতীর তপস্যা সম্পন্ন হওয়ার পর মহাদিদেব আবির্ভূত হলে পার্বতীকে গৌরবর্ণ বলে বর্ণনা করেন। এদিকে দেবী পার্বতী গঙ্গায় স্নান করলে এক অন্ধকারের দেবীর আবির্ভূত হন। যাঁকে কৌশিকী বলা হয়। যে সিংহটি দেবীকে শিকার হিসেবে খেতে এসেছিল , তাকেই বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন দেবী। কারণ দেবীর জন্য অনেক বছর অপেক্ষা করেছিল সে। সিংহের এই কর্মকাণ্ডের জন্য দেবী পার্বতীর বাহনকে সিংহ বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: Dussehra 2021: রাবণ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য, যা অনেকেরই জানা নেই