Dussehra 2021: রাবণ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য, যা অনেকেরই জানা নেই

শারদীয়া নবরাত্রির শেষদিন অর্থাত্‍ দশম দিন বলে মনে করা হয়। এদিন অসুর-রূপী রাবণকে বধ করেন রাম। সেই বিজয়কেই সাড়ম্বরে উত্‍সবে হিসেবে পালন করা হয়।

Dussehra 2021: রাবণ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য, যা অনেকেরই জানা নেই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 13, 2021 | 4:50 PM

পুজো আসছে, এমন অনুভূতিতে মন আনন্দে ভরে ওঠে। কিন্তু নবমী কাটতে না কাটতেই মনটা ভারী হয়ে ওঠে। নিজের ঘর ছেড়ে ফের স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন দেবী দুর্গা। বাঙালির দুর্গা পুজোর মাহাত্ম্যের সঙ্গে ঘরোয়া কিছু অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বিজয়া দশমীর থেকে দশেরাকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। হিন্দুদের কাছে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উত্‍সব। শারদীয়া নবরাত্রির শেষদিন অর্থাত্‍ দশম দিন বলে মনে করা হয়। এদিন অসুর-রূপী রাবণকে বধ করেন রাম। সেই বিজয়কেই সাড়ম্বরে উত্‍সবে হিসেবে পালন করা হয়।

রামায়ণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশ মাথাওয়ালা অসুর রাজা রাবণ। দুষ্ট চরিত্রের রাবণ সীতাকে হরণ করে নিয়ে এলে তাঁকে উচিত শিক্ষা দিতে রাবণকে বধ করেন রাম। আর সেই প্রথাই অব্যাহত। তবে রাবণের নেগেটিভ দিকটি নিয়েই বেশি আলোচিত হয় সর্বত্র। তবে তাঁর বিদ্যা-জ্ঞানের ভাণ্ডার সম্পর্কে কেউই অবগত নন।

১. রাবণ ছিলেন অর্ধ-ব্রাহ্মণ ও অর্ধ-অসুর। তাঁর পিতা ছিলেন বিশ্বশ্রব, পুলস্ত্য বংশের ঋষি ও মাতা ছিলেন কৈকাসি। যিনি অসুর বংশের। রাবণের আসল নাম ছিল দাসগ্রীব। যার অর্থ হল দশ মাথা। বিশ্বশ্রবের দুই স্ত্রী ছিলেন – ভারবর্ণিনী এবং কৈকাসি। ধনসম্পদের দেবতা কুবেরকে জন্ম দেন তাঁর প্রথম স্ত্রী এবং রাবণ, কুম্ভকর্ণ, শূর্পনাখা এবং বিভীষণের জন্ম হয়েছিল কৈকাসির গর্ভে।

২. রাবণ এবং তাঁর ভাই কুম্ভকারণ। তপস্যার জেরে ভগবান ব্রহ্মার কাছ থেকে তাঁরা অলৌকিক ক্ষমতা পেয়েছিলেন এবং লঙ্কা দখলের জন্য কুবেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

৩. রাবণের নাম ছিল দশগ্রীব বা দশানন (দশ মাথাওয়ালা অসুর)। ভগবান শিব ধ্যানরত কৈলাশ পর্বতকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার সময়, ঈশ্বর তাঁর পায়ের আঙ্গুল দিয়ে রাবণের কপাল চূর্ণ করে পর্বতটি চেপে ধরেন। দাসগ্রীব যন্ত্রণায় জোরে চিৎকার করলে তার নাম রাবণ রাখা হয়। যার অর্থ ‘যিনি গর্জন করেন বা চিৎকার করেন’।

৪. ভগবান শিবের অন্যতম সেরা ভক্ত ছিলেন এবং শিব তাণ্ডব স্তোত্রম রচনা করেছিলেন। তাঁর ভক্তিতে খুশি হয়ে ভগবান শিব তাঁকে চন্দ্রহাস নামে একটি অজেয় তলোয়ার উপহার দেন।

৫. রাবণ ইক্ষাকু রাজবংশের রাজা অনারন্যাকে হত্যা করেছিলেন রাবণ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভগবান রামও। মৃত্যুর সময় রাজা অনারণ্য রাবণকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে রাজা দশরথের পুত্র শেষ পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করবে। এজন্যই দশেরা রাবণের উপর ভগবান রামের বিজয়কে চিহ্নিত করে।

৬. রাবণ বানর রাজা বালিকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। যিনি সমুদ্রতীরে সূর্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করছিলেন। বালি এত শক্তিশালী ছিলেন যে, তিনি রাবণকে বাহুতে বহন করে কিষ্কিন্ধ্যায় নিয়ে যান। বালির কাছে রাবণের পরাজিত হওয়ার পর দুজন বন্ধু হয়ে যায়। বালি সুগ্রীবের সঙ্গে যুদ্ধ করার সময় রামের হাতে নিহত হন।

৭. রাবণ শুধু একজন অসাধারণ যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি বেদের বিশেষজ্ঞ এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের বিশেষজ্ঞও ছিলেন। লা হয়ে থাকে যে, যখন তার পুত্র মেঘানদা তার স্ত্রী মন্দোদরীর গর্ভ থেকে জন্ম নেবেন, তখন রাবণ সমস্ত গ্রহ এবং সূর্যকে ‘লগ্ন’ এর জন্য তাদের যথাযথ অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল যাতে তার ছেলে অমর হয়ে যায়। কিন্তু শনি হঠাৎ তার অবস্থান পরিবর্তন করলে রাবণকে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং সে তার গদা দিয়ে শনিকে আক্রমণ করে এবং তার একটি পা ভেঙে দেন।

৮. রাবণ ছিলেন রাষ্ট্রযাত্রার একজন মহান অনুশীলনকারী। যখন ভগবান রাম রাবণকে হত্যা করেছিলেন, তখন রাম তার ভাই লক্ষ্মণকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাবণের কাছে গিয়ে মরণশীল অসুর রাজার কাছ থেকে রাষ্ট্রযাত্রা এবং কূটনীতির শিল্প শিখতে।

৯. হাজার বছরের তপস্যার পর, ভগবান ব্রহ্মার কাছে অমরত্বের জন্য একটি বর চেয়েছিলেন রাবণ। কিন্তু তাঁর বরের ইচ্ছে প্রত্য়াখ্যান করলে তাঁর জীবনভোমরা নাভিতে কেন্দ্রীভূত করা হয়। রাম-রাবণের যুদ্ধের দশম দিনে রাবণের ভাই বিভীষণ রামকে বলেছিলেন, অসুর রাজাকে হত্যা করতে হলে তাঁর নাভিতে তীর মারতে হবে।

১০. রাবণ ব্রহ্মার কাছ থেকে এই আশীর্বাদ পেয়েছিলেন যে, কোন দেবতা, অসুর, কিন্নর বা গন্ধর্ব তাকে কখনও হত্যা করতে পারবে না। মানুষ হিসেবে রামই শেষ পর্যন্ত রাবণকে হত্যা করেছিলেন।

আরও পড়ুন: Navratri: নারীশক্তির আরাধনা করা হয় দেশের এই ৮ বিখ্যাত মন্দিরগুলিতে!