World Cup: ‘দলের ক্ষতি চাইনি…,’ স্কোয়াডে থেকেও ভারতের বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার হতে পারেননি

Aug 13, 2024 | 1:56 AM

ICC World Cup 2011: সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। তবে অস্ট্রেলিয়ার কাছে গত ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের ক্ষত কিছুটা হলেও রয়ে গিয়েছে। আর ভারতের সেই পেসার? যিনি ২০১১ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েও নাম তুলে নিয়েছিলেন! টিভিতে ম্যাচ দেখে কী অনুভূতি হয়েছিল?

World Cup: দলের ক্ষতি চাইনি..., স্কোয়াডে থেকেও ভারতের বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার হতে পারেননি
Image Credit source: X

Follow Us

হতে পারতেন বিশ্বজয়ী দলের সদস্য। চোট লুকিয়ে রাখলেই হত। কিন্তু দলের ক্ষতি চাননি। বিশ্বকাপের দলে নাম ছিল। সেই ১৩ বছর আগের কথা। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার ইতি হয়েছিল সে বার। ওয়াংখেড়ের সেই রাত এখনও ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের মনে ঝড় তোলে। গত বছর এমনই একটা মুহূর্ত আসতে পারত। ওয়ান ডে ফরম্যাট, ফের ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। টানা দশ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার। সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। তবে অস্ট্রেলিয়ার কাছে গত ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের ক্ষত কিছুটা হলেও রয়ে গিয়েছে। আর ভারতের সেই পেসার? যিনি ২০১১ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েও নাম তুলে নিয়েছিলেন! টিভিতে ম্যাচ দেখে কী অনুভূতি হয়েছিল?

একটু বিস্তারিত আসা যাক। ভারতের দল ঘোষণা। ১৭ জানুয়ারি, ২০১১। চেন্নাইতে সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা তৎকালীন দল নির্বাচক প্রধান কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তের। ওয়ান ডে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা হল। বোলারদের তালিকায় নাম প্রবীণ কুমারের। ভারতের অন্যতম সেরা সুইং বোলার। নির্বাচক প্রধানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, প্রবীণ কুমারের তো চোট রয়েছে, তা হলে কেন বিশ্বকাপের টিমে? শ্রীকান্ত জবাব দিয়েছিলেন, ‘প্রতিটা দলেই চোট সমস্যা থাকে। এটা নিয়ে ভাবার কী রয়েছে!’

প্রবীণ কুমার সে সময় জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে! সেরে ওঠার চেষ্টা করছেন! প্রবীণ জানান, সে সময় তিনি আমেদাবাদে ছিলেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু বিশ্বকাপ। ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে আসে, টিম থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রবীণ কুমার। তাঁর পরিবর্তে দলে নেওয়া হয় শান্তাকুমারন শ্রীসন্থকে। কী হয়েছিল? একটি ইউটিউব শো-তে প্রবীণ কুমার বলেন, ‘আসলে আমার কনুইতে চোট ছিল। হাড় বেড়ে গিয়েছিল। চেষ্টা করেছিলাম, যাতে ঠিক হওয়া যায়। অনেকেই চোট লুকিয়ে খেলেন। চাইলে সেটাও করতে পারতাম।’

তা হলে? প্রবীণ যোগ করেন, ‘বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে কে না চায়। আমিও দ্রুত জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গিয়েছিলাম। যদি সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। আশিস কৌশিক বলে একজন ফিজিও ছিলেন। সে সময় এনসিএ-র ডিরেক্টর ছিলেন সন্দীপ পাতিল। সন্দীপ স্যার বলেন-পিকে (প্রবীণ কুমারের ইনিশিয়াল) এটা হৃদয় দিয়ে ভাবার সময় নয়, মস্তিষ্ক দিয়ে ভাবতে হবে। আমি বল থ্রো-ই করতে পারছিলাম। কৌশিকও বলে, কী ভাবে হবে। বলই ছুড়তে পারছিলাম না, বোলিং কী করব! বাড়ি ফিরে আসি। শুয়ে আছি। ডেঙ্গুও হয়েছিল। তারপর কনুইয়ে চোট। এটা পুরনো চোট। পরে বুঝতে পেরেছিলাম, অস্ত্রোপচার ছাড়া এটা ঠিক হবে না। ডঃ অ্যান্ড্রু ওয়ালেসও দেখেছিলেন। ক্রীড়াবিদদের কাছে অতি পরিচিত নাম। সচিনেরও চোট সারিয়েছিলেন।’

কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ানো। কতটা হতাশার ছিল? প্রবীণ বলেন, ‘চোট থাকাটা খেলারই অংশ। ভাবতে হয়, এটাকে ঠিক কী ভাবে করা যায়। অনেকেই চোট লুকোয়। আমার মাথায় সে সময় একটা বিষয়ই ঘুরছিল, চোট লুকবো না। কারণ, টিমের ক্ষতি হোক সেটা চাইনি। আমি না খেললে, অন্য কেউ খেলবে। কিন্তু আমি খেললে, টিমের ক্ষতিও হতে পারত। সেটাই কোনওমতেই চাইছিলাম। নিজের যতই ক্ষতি হোক, টিমের ক্ষতি না হওয়াটা প্রায়োরিটি। সে কারণেই নিজে থেকে নির্বাচকদের জানিয়েছিলাম। আমার পরিবর্তে অন্য কাউকে নেওয়া হোক।’

টিম বিশ্বকাপে খেলছে, বাড়িতে বসে টিভিচে ম্যাচ দেখেছেন প্রবীণ কুমার। হতাশা একটু হলেও ছিল। তাতে অবশ্য আক্ষেপ নেই প্রবীণের। তাঁর মুখে বারবার একটা কথাই উঠে আসছিল, টিমের যেন ক্ষতি না হয়।

Next Article