চাঁদের পর এবার মঙ্গল। আমেরিকার পর এবার চিন। মঙ্গলের মাটিতে পা রেখে ইতিহাস গড়ল চিন। শনিবার চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া জানিয়েছে, এদিন ভোরে লাল গ্রহের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করেছে ছয় চাকার সৌরবিদ্যুতচালিত মহাকাশ যান Zhurong রোভার। প্রথমবার মঙ্গল অভিযানে ঐতিহাসিক কীর্তিতে উচ্ছ্বসিত বেজিংয়ের চিন ন্যাশানাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (CNSA) মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
এদিন চিনের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, লালগ্রহে অবতরণ করার পর কয়েকদিন ল্যান্ডারের ভিতরেই থাকবে রোভার। মঙ্গলের উত্তর পুরু বরফের আস্তরণে মোড়া ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়া নামে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পর্যবেক্ষণের আগে ল্যান্ডার থেকে বাইরে বের হয়ে পরিবেশ ও পরিস্থিতি পরীক্ষা করে তবেই নিজের কাজে মগ্ন হবে অত্যাধুনিক রোভারটি।
চিনের সিএনএন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২৪০ কেজি ওজনের এই রোবট যান ল্যান্ডার থেকে নেমে তিনমাসের মূল অভিযান শুরু করবে। চিনের অগ্নিদেবতার নামে নামকরণ করা হয়েছে এই মহাকাশ যানের। লালগ্রহে মাটিতে আদৌও প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল কিনা, সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, মঙ্গলের মাটির নীচে জল রয়েছে কিনা, বরফ ও বায়ুমণ্ডল নিয়ে গবেষণা শুরু করবে।এতে রয়েছে ছয় ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সরঞ্জাম।
চিনের মহাকাশ কেন্দ্র থেকে আরও জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের ২৩ জুলাই শুরু হয়েছিল মঙ্গল অভিযান। দীর্ঘ সাতমাস ঐতিহাসিক যাত্রার পর চিনের মার্স অরবিটার তিয়ানওয়েন-১ গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশ করে। তারপর থেকে মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। সেইসময়ই উত্তর গোলার্ধের বরফাবৃত জায়গাগুলিতে জরিপ করার কাজ শুরু করে মহাকাশ যানটি। সেখানকার ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল তিয়ানিরাপদ জায়গা চিহ্ণিত করার পরই শনিবার ভোরে সেটি লালগ্রহের মাটিতে পা রাখতে সাহায্য করে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে চিনের নিজস্ব স্পেস স্টেশনও গড়ে তুলতে চলেছে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (IAS)-এর পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।