পৃথিবীর অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি মেটা-র সিইও (Meta CEO) মার্ক জ়াকারবার্গ (Mark Zuckerberg)। আর তাঁর সুরক্ষার জন্য সংস্থাটি কত টাকা যে ব্যয় করে, তা শুনলে সত্যিই অবাক হতে হয়। শুধু যে শারীরিক আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য জ়াকারবার্গের নিরাপত্তা জোরদার করা হয় এমনটা নয়। সেই সঙ্গেই সাইবার হানার আশঙ্কাও থেকে যায়। আর তার একমাত্র কারণ হল জ়াকারবার্গ যে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের মালিক, তা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম। নিছকই কৌতূহলের বশে অনেকে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়েই গোপনীয়তায় আক্রমণ করে বসতে পারেন।
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, মার্ক জা়কারবার্গের যাবতীয় সম্পদ নিরাপদে রাখতে প্রচুর টাকা খরচ করে মেটা। সিকিওরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে ফাইল করা তথ্য অনুযায়ী, জ়াকারবার্গের সিকিওরিটি ও প্রাইভেট জেট খাতে ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে আগেকার ফেসবুক তথা আজকের মেটা। ২০২০ সালে যখন সংস্থাটির নাম ফেসবুক ছিল, তখন এই খাতে কোম্পানির খরচ ছিল ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালে এই খরচের পরিমাণই আবার ছিল ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ পরিসংখ্যান থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, প্রতি বছরে ২ মিলিয়ন করে বেড়েছে মার্ক জ়াকারবার্গকে সুরক্ষিত রাখার খরচা।
পরিসংখ্যান থেকে এ-ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, বিশ্বের কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির নিরাপত্তা খাতে এত টাকা খরচ করা হয় না। এমনকি মেটা-রই আর এক হাই-প্রোফাইলড এগজ়িকিউটিভ শেরিল স্যান্ডবার্গের নিরাপত্তা খাতেও এত টাকা খরচ করে না মেটা বা ফেসবুক। শেরিলের সিকিওরিটি খাতে প্রতি বছরে এই মুহূর্তে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে মেটা। ২০২১ সালে জ়াকারবার্গের প্রাইভেট জেটের জন্য ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ খরচ করেছিল মেটা। এই হিসেবটাই আবার ২০১৯ ও ২০২০ সালে ছিল যথাক্রমে ২.৯ মিলিয়ন এবং ১.৮ মিলিয়ন। এছাড়াও জ়াকারবার্গের পরিবারের প্রিট্যাক্স অ্যালাওয়েন্স হিসেবে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে মেটা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জ়াকারবার্গের সিকিওরিটি খাতে এত টাকা কেন খরচ করে মেটা? তার সবথেকে বড় কারণ হল, ব্র্যান্ডের সঙ্গে মার্কের সরাসরি যোগাযোগ। কোম্পানির ফাইল করা তথ্য অনুযায়ী, “আমাদের ক্ষতিপূরণ, মনোনয়ন এবং পরিচালনা কমিটির তরফে বার্ষিক এই নিরাপত্তা প্রোগ্রামগুলি মূল্যায়ন করা হয়, যার মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত হুমকি এবং নিরাপত্তা প্রোগ্রামের জন্য সুপারিশগুলির পর্যালোচনা-সহ আরও একাধিক প্রোগ্রাম রয়েছে। মিস্টার জ়াকারবার্গ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা, সিইও, চেয়ারম্যান এবং নিয়ন্ত্রণকারী শেয়ারহোল্ডার হওয়ার ফলে তাঁর সামগ্রিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়নের পর থেকে এই মূল্যায়নগুলির প্রতিটি ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট করে একাধিক বার হুমকি এসেছে।”
ফাইলিংয়ে সংস্থাটির তরফে আরও বলা হয়েছে, “আমরা বিশ্বাস করি যে, মিস্টার জ়াকারবার্গের ভূমিকা তাঁকে একটি অনন্য অবস্থানে রাখে। তিনি মেটা-র সমার্থক। আর সেই কারণেই আমাদের কোম্পানির সম্পর্কে যে কোনও নেতিবাচক মনোভাব সরাসরি মার্কের সঙ্গে যুক্ত। জ়াকারবার্গ হলেন বিশ্বের সবচেয়ে স্বীকৃত এগজ়িকিউটিভদের একজন। তাই তাঁর নিরাপত্তা জোরদার করা মানে সমগ্র প্ল্যাটফর্মটাই সুরক্ষিত রাখা।”
এমনকি গুগল, মাইক্রোসফ্ট এবং ট্যুইটারের মতো সংস্থাগুলিও এতটা অর্থ খরচ করে না, যতটা মেটা তার সিইও-কে সুরক্ষিত রাখতে খরচা করে। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এর সেই রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, সিইও সুন্দর পিচাইয়ের পিছনে বছরে ৪.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ব্যয় করে গুগল, যা মেটা-র স্যান্ডবার্গের কাছাকাছিই প্রায়। অন্য দিকে আবার ইভান স্পাইজেলের পিছনে ২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ খরচ করে স্ন্যাপচ্যাট এবং ওর্যাকেলের ল্যারি এলিসনের জন্য সংস্থাটি ২.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ব্যয় করে।
আরও পড়ুন: রিলায়েন্স জিও-র অবাক করা অফার! এই প্ল্যানটি রিচার্জ করলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জিওফোন
আরও পড়ুন: ৩২ জনকে নিয়ে গ্রুপ ভয়েস কল, হোয়াটসঅ্যাপে আসছে অত্যন্ত জরুরি কিছু ফিচার্স
আরও পড়ুন: পয়লা টেক: আপনার প্রথম স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও হেডফোন কেমন হতে পারে?