নতুন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই গ্রহ নাকি বৃহস্পতি গ্রহের তুলনায় ১০ গুণ বড়। সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। এবার নাকি তার থেকেও বড় গ্রহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই গ্রহ আবার একজোড়া বড় এবং অত্যধিক উষ্ণ নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এই ধরনের পরিবেশ একসময় যেকোনও গ্রহের গঠনের জন্য অত্যন্ত অনুপযুক্ত বলে মনে করা হত। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, বিজ্ঞানীরা এই নতুন গ্রহের নাম দিয়েছেন, b Centauri (AB)b অথবা b Centauri b।
এই দৈত্যাকার গ্রহ আবিষ্কার করেছে ইউরোপীয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি (ESO)। এই অবজারভেটরি চিলির মরুভূমিতে অবস্থিত। একটি অতিরিক্ত বড় টেলিস্কোপের সাহায্যে এই গ্রহ তাদের পর্যবেক্ষণে এসেছে। ESO- র তরফে জানানো হয়েছে যে বি-টাইপ গ্রহটি আসলে ডুয়াল স্টার। এই দ্বৈত নক্ষত্র বেশ ভাল পরিমাণে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন অতিবেগুনি রশ্মি এবং এক্স রে বা এক্স রশ্মি নিঃসরণ করে। আশপাশের গ্যাসীয় উপাদানের উপর এই দু’ধরনের রশ্মিরই প্রভাব যথেষ্ট বেশি। আর সেই প্রভাব গ্রহের গঠনের বিরুদ্ধে কাজ করে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কথায়, b Centauri (AB) b আদতে একটি এক্সোপ্ল্যানেট। অর্থাৎ এটি এমন একটি গ্রহ যার অবস্থান আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরের অংশে। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা যা আবিষ্কার করেছেন, তার থেকে দেখা যাচ্ছে যে, আগে যা বিশ্বাস করা হত তার থেকে অনেক বেশি আয়তনের নক্ষত্রের সিস্টেমে তৈরি হতে পারে। নতুন যে গ্রহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেটি বৃহস্পতির থেকে আয়তনে ১০ গুণ বড় হওয়ায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গ্রহ এ যাবৎ আবিষ্কার হওয়া সমস্ত এক্সোপ্ল্যানেটের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এছাড়াও বিজ্ঞানীরা বলছেন এই গ্রহের কক্ষপথও বেশ অদ্ভুত। এর আগে কোনও গ্রহের ক্ষেত্রে এমন কোনও অদ্ভুত কক্ষপথ আবিষ্কৃত হয়নি।
এছাড়াও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, সূর্য থেকে বৃহস্পতির দূরত্বের ১০০ গুণ বেশি দূরত্ব রয়েছে এই এক্সোপ্ল্যানেট। আর কেন্দ্রস্থলে থাকা জোড়া নক্ষত্র থেকে এই গ্রহের অতিরিক্ত দূরত্বই সেটি বেঁচে থাকার জন্য হয়তো চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, Centaurus constellation- এর সোলার সিস্টেমের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে একজোড়া নক্ষত্র এবং এই এক্সোপ্ল্যানেট। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতির থেকে ১০ গুণ এই গ্রহ প্রথম খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল জুলাই মাসে। আর নেচার জার্নালে চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এই গ্রহের আবিষ্কার বর্তমান থাকা গ্রহ এবং নক্ষত্রদের গঠন কীভাবে হয়েছিল, অর্থাৎ কীভাবে তৈরি হয়েছিল এইসব নক্ষত্র এবং গ্রহ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- Solar Storm: সৌরঝড় নিয়ে নাসার সতর্কতা, মাঝারি প্রভাবের সম্ভাবনা নীলগ্রহের দক্ষিণ ভাগে