Bangladesh Situation: বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক অবস্থান কতটা পাল্টেছে ভারতের? দুই বাংলার মানুষ কী ভাবছেন?
হামলার পারদ চড়ছেই বাংলাদেশে। জ্বলেছিল মন্দির, এবার পুড়ে গেল মূর্তি। সন্ত্রাসের থাবায় উকিল পেলেন না চিন্ময় প্রভু। হল না জামিনের শুনানি। বাংলাদেশে তালিবানি কায়দায় ফতোয়া জারি। কী বলছেন ওপার বাংলার মানুষ? স্বাধীনতার অবদানে কী পেল ভারত?
পদ্মার জল ঘোলা হচ্ছে দিন দিন। কাঁটাতারের এ-পারে উত্তাপ বেড়েছে আরও। আর ও-পারে? কতটা তলানিতে ঠেকেছে পরিস্থিতি? বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক অবস্থানই বা কতটা পাল্টেছে ভারতের? দুই বাংলার মানুষ কী ভাবছেন?
সন্ত্রাসের কবলে সংবিধান
জাতীয় পতাকার অবমাননা। অভিযোগ ছিল এমনটাই। সেই অভিযোগেই চিন্ময় প্রভু সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর। অভিযোগ করেছিলেন কে? একজন বিএনপি নেতা। ফিরোজ খান। কিন্তু তাতে থেমে যান নি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ও তার সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম অত্যাচার। পুড়ে যাচ্ছে ঘর বাড়ি। বাংলাদেশের ছবি এখন এটাই। তবে এর শুরু হয়েছিল ৫ আগস্টের পর থেকেই। হাসিনার দেশত্যাগের পর। সেদিন ছাড় পাননি শিল্পীরাও। তাদের কী অপরাধ? তারা হিন্দু? নাকি তাদের ভারত-যোগ? চিন্ময় কৃষ্ণের শুনানি ঘিরে জল ঘোলা হচ্ছিলোই। তাঁর গ্রেফতারির নাটক আপনাদের মনে আছে? প্রায় কিডন্যাপ করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। আইনের ফাঁদে আটকেও শেষ নেই বিড়ম্বনার। তারিখ পে তারিখ। তার উপরে গণপিটুনির হুঁশিয়ারি। আইন কানুন শিকেয়। সৌজন্যে চরমপন্থা। মৌলবাদ। আফগানিস্তানের তালিবান শাসনের কথা আপনারা জানেন। জানেন সেখানে মহিলাদের স্বাধীনতা থেকে নিরাপত্তা সবটাই শরিয়ার খাঁচায় বন্দি। এবার তালিবানি স্টাইলে শরিয়া প্রচারে নামলো বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা।
ও-পারে হামলা, এ-পারে আশ্রয়
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে সেখানেই। যারা ও-পারে গিয়েছিলেন তাদের অভিজ্ঞতায় শিউরে উঠতে হচ্ছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ছাপ সবার মুখে। যাদের ফিরতে হবে বাংলাদেশে। কেউ এসেছিলেন রোগের দায়ে, কেউ বা অন্য প্রয়োজনে। কী বলছেন তাঁরা? কীভাবে বাংলাদেশের স্মৃতি বলতে গেলেই আঁতকে উঠছেন পড়শি দেশ থেকে আসা মানুষ? ভারতে এসে কেন বাংলাদেশী নাগরিকরা ফেলছেন স্বস্তির নিশ্বাস? কাঁটাতার পেরিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হচ্ছে। আবার কাঁটাতার পেরোতেই ভয়ে শিউরে উঠতে হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বধ্যভূমি। হিংসার আগুনে কে কখন জ্বলে যাবে বোঝা দায়। এপার বাংলার এক যুবক। ছাড় পেলেন না বাংলাদেশে।
পড়শি দেশের প্রতিদান
সপ্তাহ খানেক পর ২০২৪ সালের বিজয় দিবস। কিন্তু এই এক ছবি দেখা যাবে সেখানে? কেন বিজয় দিবসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুই পড়শি দেশের সেন্টিমেন্ট। উত্তরটা খুঁজবো ইতিহাসের পাতায় । সেই সঙ্গে আপনাদের দেখাব আজকের দিনের ছবি। যেখানে প্রতিদিন ভারত বিদ্বেষের হাওয়ায় উত্তপ্ত বাংলাদেশ। কীভাবে পাল্টে গেল সম্প্রীতির সমীকরণ? ভারত বাংলাদেশের পক্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বারবার। রপ্তানি থেকে দ্বিপাক্ষিক মৌ স্বাক্ষর। কোনোদিনই বন্ধুত্বে কার্পণ্য করেনি ভারত। মুজিবের মূর্তি আগেই ভেঙেছিল, এবার বাংলাদেশের টাকা থেকেও সরছে বঙ্গবন্ধুর ছবি। আর হয়তো পালিত হবে না বিজয় দিবসও। মুক্তিযুদ্ধ কিংবা ভারত, সবকিছুর স্মৃতি ভুলে আবার কী পূর্ব পাকিস্তানের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে বাংলাদেশ?
ঢাকায় আগুন, তপ্ত কলকাতা
তুঙ্গে ভারত বিদ্বেষ। সেই পরিস্থিতিতেই উত্তপ্ত এপার বাংলা। শাসক-বিরোধী সুর চড়ছে। কখনও সমান তালে, কখনও আবার একে ওপরের বিরুদ্ধে। রাজ্যের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আক্রমণের ঝাঁঝ দিন দিন বাড়ছে। ফ্রন্টে বিজেপি। বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে রাজ্যের রাজনৈতিক জমি ছাড়তে নারাজ বাকি বিরোধী শিবিরগুলিও। শান্তিবাহিনীর হস্তক্ষেপ হোক বা ইউনূস সরকারের শুভবুদ্ধির উদয়। যেকোনও মূল্যে শান্তি ফিরুক বাংলাদেশে। ওপার বাংলার সব মানুষ নিরাপত্তা এক। এটুকু ছাড়া চাওয়ার কিছুই নেই। অশান্ত বাংলাদেশের ভয়াবহ ছবি কবে পাল্টাবে? সেদিকেই নজর থাকবে এপার বাংলার। এই দেশের। পড়শির কান্না, পড়শির পুড়ে যাওয়ার ছবি দিনের পর দিন মেনে নেওয়া যায় কী?