বীরভূম: বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) -কে একাধিকবার একাধিক প্রেক্ষিতে নিশ না করেছেন বীরভূমের তৃণমূল (TMC) জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Madal)। এবার হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের পর ফের বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কটাক্ষ করলেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘যেভাবে রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিতে চাইছেন, ওনার শাস্তি পাওয়া উচিত।’
বুধবার বীরভূমের নানুরের ছোট শিমুলিয়া গ্রামে একটি দলীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা বিশ্বভারতীর মামলায় এদিনের আদালতের রায় প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া চাইলে ফের উপাচার্যকে একহাত নেন তিনি। তাঁর কথায়, “কোর্টকে অসম্মান করব না। আমরা আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। কোর্ট কে আমরা সম্মান করি। হাইকোর্ট, সব কোর্ট যা রায় দেবে মাথা পেতে নেব। তবে উপাচার্য একটি পাগল লোক। উনি যা করছেন সেটা মানা যায় না। উনি যেভাবে আরম্ভ করেছেন রবীন্দ্রনাথকে শেষ করে দিচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিতে চলেছেন। তাতে তাঁর শাস্তি পাওয়া উচিত এটুকুই বলতে পারি।”
উল্লেখ্য, এদিন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)-তে চলা পড়ুয়াদতের আন্দোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে, তিন বছর বহিষ্কারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাকে লঘু পাপে গুরু দণ্ড বলেছেন বিচারপতি। উপাচার্য প্রসঙ্গেও বেশ কিছু মন্তব্য করেন বিচারপতি মান্থার।
পাশাপাশি বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি যে ছাত্রদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। কিন্তু এটাও ঠিক হচ্ছে না। আমি ছাত্রদের সাসপেনশন তুলে দিতে বলছি। কিন্তু কোনও বাইরের লোক আসবে না। ছাত্ররা আন্দোলন বন্ধ করবে। কোনও রাজনৈতিক দলের নাক গলানো চলবে না।’ এই প্রেক্ষিতে ফের উপাচার্যকে কটাক্ষ করলেন অনুব্রত মণ্ডল।
এর আগে বিশ্বভারতীতে চলা আন্দোলন প্রসঙ্গে উপাচার্যকে ঘেরাওয়ের নিদান দিয়েছিলেন অনুব্রত। বলেছিলেন, “বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁরা পাগল উপাচার্যকে ঘেরাও করুক। টানা তিনদিন ঘেরাও করে রাখব। তৃণমূল কংগ্রেস অধ্যাপকদের পাশে রয়েছে। বিশ্বভারতীকে পুরো নষ্ট করে দিয়েছে ওই পাগল উপাচার্য। চতুর্দিকে ময়লা, নোংরা। ওঁকে ঘেরাও করা হবে। ওঁর পাগলামি তো! সব পাগলামি ছাড়িয়ে ছাড়ব। আমার জানা রয়েছে এর ওষুধ কী! ওই পাগল উপাচার্যের ব্যবস্থা হবে। যে পারে আটকে দেখাক!”
তাঁর এই বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেয় বিজেপিও। দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, বিশ্বভারতীতে চলা অশান্তির মূলে রয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। বিশ্বভারতীর পাঁচিল ভাঙা থেকে বর্তমানে চলা বিশ্বভারতীর অশান্তিতে ইন্ধন তৃণমূলই দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে এদিন হাইকোর্টের রায়ের পরও আন্দোলন জারি রয়েছে পড়ুয়াদের। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গেলে রেজিস্টারের গাড়ি আটকে দেন আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন: ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ বিশ্বভারতীর রেজিস্টারের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়লেন আন্দোলনকারী!