দক্ষিণ দিনাজপুর: ছ’বছরের প্রেম। চার বছরের দাম্পত্য জীবন। সেই সম্পর্ক এখন ভাঙতে চাইছেন তরুণী স্ত্রী। অভিযোগ, নার্সিং ট্রেনিং শেষ করে সদ্য চাকরিতে ঢুকে রাজমিস্ত্রি স্বামীর ‘স্টেটাস’-এর সঙ্গে মানাতে পারছেন না তিনি। তবে স্ত্রীকে কোনওভাবেই ছাড়তে রাজি নন বালুরঘাটের অমৃতখণ্ডের অরূপ বর্মন। বুধবার রাত থেকে স্ত্রীর বাড়ির সামনে তাই ধরনায় বসেছেন। বৃহস্পতিবার সকালেও অবস্থানে অনড়। দাবি একটাই, ‘তোমাকে চাই’। না পেলে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিয়েছেন স্বামী। ঘটনাস্থলে বালুরঘাট থানার পুলিস।
অরূপ পেশায় রাজমিস্ত্রি। চার বছর আগে স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন তিনি। স্থানীয়দের কথায়, দুই পরিবারের সহমতেই বিয়ে হয়েছিল। তবে বিয়েতে সামাজিক কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। বিয়ের পর পরই নার্সিং ট্রেনিংয়ের সুযোগ আসে ওই তরুণীর। অরূপের পরিবারের দাবি, বউমার বাপের বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তাই কষ্ট করে অরূপ এবং অরূপের বাবা তাঁর ট্রেনিংয়ের সবরকম খরচ দেন। চলতি বছরে দুর্গাপুজোর আগেই গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নার্স হিসাবে যোগ দেন ওই তরুণী। অভিযোগ, সরকারি চাকরি পাওয়ার পরই বদলাতে শুরু করেন তিনি। কোনওভাবেই অরূপের সঙ্গে থাকবেন না বলে গো ধরেন।
আরও পড়ুন: কয়লাকাণ্ডে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ঘনিষ্ঠের বাড়িতে সিবিআই হানা
অরূপের কথায়, “আজ আট বছরের সম্পর্ক। বিয়ের পর নার্সিং ট্রেনিংয়ে গেল। আমি সবসময় ওর পাশে থেকেছি। কত কষ্ট করে ওর সব খরচ চালিয়ে গিয়েছি। এখন চাকরি পেয়ে বলছে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই না। ও এখন ভাল একটা জায়গায় চলে গিয়েছে, স্টেটাসটা ভাল হয়েছে তাই হয়তো আমাকে আর ভাল লাগছে না। কিন্তু আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না। ও না এলে আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে।”
বালুরঘাট থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গেলে তাদের কাছেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান অরূপ। রীতিমত রেজিস্ট্রির কাগজপত্র নিয়ে বুধবার রাত থেকে ধরনা চালাচ্ছেন। এই কনকনে ঠান্ডায় রাতভর বসেছিলেন তিনি। অরূপের পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর পরিবার, প্রতিবেশীরা। অরূপের কথায়, “আমার স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য, আমার ভালবাসা ফিরে পাওয়ার জন্য ধরনায় বসেছি। আমার সব জেনেই আমাকে ভালবেসেছিল ও, বিয়ে করেছে। চাকরি পাওয়ার পর একেবারে বদলে গেল। আমি শুধু ওকেই চাই।” যদিও এ বিষয়ে ওই তরুণী বা তাঁর পরিবারের কেউ সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি।