বালুরঘাট: বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়ার প্রায়শ্চিত্ত করতে দণ্ডি কাটলেন চার মহিলা। শুক্রবার সন্ধ্যায় বালুরঘাট (Balurghat) শহরে প্রায় এক কিলোমিটার দণ্ডি কেটে জেলা তৃণমূল (Trinamool Congress) কার্যালয়ে আসেন তাঁরা। যোগ দেন তৃণমূলে। পরে তাদের হাতে পরে দলীয় পতাকা তুলে দেন মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। আগামীদিনে তাঁদের হাত ধরে আরও অনেকেই তৃণমূলে যোগ দেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিকে তৃণমূলে যোগদানকারীরা জানিয়েছেন বিজেপিতে যোগদান করার পরেই তাঁরা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই নিজেদের ভুল শুধরে নিতে বা ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে দণ্ডি কেটে জেলা কার্যালয়ে এসে তাঁরা তৃণমূলে যোগদান করলেন। আগামীতে তাঁদের সঙ্গে আরও অনেকে যোগদান করবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে যাঁরা এদিন তৃণমূলে যোগদান করলেন তাঁরা কেউই বিজেপি করতেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী ষষ্ঠী বসাক ভট্টাচার্য। তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ তৃণমূলে যোগদান করে থাকে তাহলে তাঁদের ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভন দিয়ে যোগদান করানো হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদ সনকইর এলাকায় প্রায় ২০০ জন মহিলা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। বিজেপিতে যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী, মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী ষষ্ঠী বসাক ভট্টাচার্য, বিধায়ক বুধরাই টুডু। তারপরেই রাজ্য ও জেলা মহিলা তৃণমূল নড়েচড়ে বসে। বিজেপিতে যোগদান করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এবার পাল্টা যোগদান করাল মহিলা তৃণমূল। গতকাল যাঁরা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন এদিন তাঁদের মধ্যে চারজন মার্টিনা কিস্কু, শিউলি মার্ডি, ঠাকরণ সরেন ও মালতি মুর্মু বালুরঘাট শহরের কোর্ট মোড় থেকে দণ্ডি কাটতে কাটতে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে আসেন। সেখানেই তাঁরা তৃণমূলে যোগদান করেন।
জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে বিজেপিতে যোগদান করার ‘শাস্তি’ হিসেবেই ওই তৃণমূল কর্মীদের দিয়ে দণ্ডি কাটানো হয়। ভর সন্ধ্যায় রাস্তাতে এই ধরনের দৃশ্যতে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বালুরঘাটে। এ বিষয়ে তৃণমূলে যোগদানকারী মার্টিনা কিস্কু জানান, তাঁদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছিল। বিজেপিতে যোগদান করার পর সারারাত তাঁরা ঘুমাতে পারেননি। তাই ভুল বুঝতে পেরেই তাঁরা আজ দণ্ডি কেটে তৃণমূলে যোগদান করলেন।
এ বিষয়ে মহিলা তৃণমূল জেলা সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তী জানান, “গতকাল যারা বিজেপিতে যোগদান করেছে বলে বলা হয়েছে তাঁদের বেশির ভাগ বিজেপির সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা বিজেপির হয়ে কাজ করেন। তাঁদেরই আবার বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছে। কিছু হলেই তৃণমূলকে টানা বর্তমানে বিজেপির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে৷ কিছু সাধারণ মানুষ যাঁদের কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ ছিল না, তবে তৃণমূলের সমর্থক ছিল তাঁদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়। সেই ভুল বুঝতে পেরে তারা দণ্ডি কেটে তার প্রায়শ্চিত্ত করে। তারপর তৃণমূলে যোগদান করেন। বাকিরাও আগামীতে যোগ দেবেন।”
অন্যদিকে এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী জানান, “রাজনৈতিক চাপে পড়ে ২০০ জনের মধ্যে মাত্র তিন-চারজনকে ফিরিয়ে এনেছে। তবে যেভাবে মহিলাদের রাস্তায় নাক খত (দণ্ডি) দিয়ে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা মহিলাদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত লজ্জাকর ও অপমানজনক।” বিষয়টা নিয়ে মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলেও তিনি জানান। ঘটনাটি নিয়ে টুইট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা ওদের শাসকদলে যোগ দিতে বাধ্য করেছে। শাস্তিস্বরূপ ওদের দণ্ডি খাটানো হয়েছে।’
Martina Kisku, Shiuli Mardi, Thakran Soren and Malati Murmu, resident of Tapan Gofanagar, Tapan, joined BJP yesterday. They belong to ST community.
Today, TMC goons forced them to return to TMC and punished them by asking to do Dandavat Parikrama. pic.twitter.com/eks61eD2EP
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) April 7, 2023