বালুরঘাট: “বিজেপি (BJP) কে নিয়ন্ত্রণ করার মত মানসিকতা এখনও তৈরি করতে পারিনি। এমনিতেই ওদের ঘৃণ্য মত। তাই বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করা হয়নি”। সোমবার বিকালে বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বইমেলার উদ্বোধন করে ঠিক এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury)। যা নিয়ে শুরু হল তীব্র বিতর্ক।
সম্প্রতি বিজেপি বিধায়কদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছাড়া প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর কটাক্ষ, “বাংলায় বিজেপির কোন অস্তিত্ব নেই, জোর করে পিরিত করার মত অবস্থা বিজেপির”।
সোমবার বালুরঘাটে ২৬ তম জেলা বইমেলা অনুষ্ঠানে বিজেপির কোনও জনপ্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। অথচ, তৃণমূলের জেলা সভাপতির নাম আমন্ত্রণপত্রে রাখা হয়েছে বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে। এছাড়াও বই মেলা উদ্বোধনে মঞ্চে একাধিক তৃণমূল নেতা মঞ্চে আসন আলো করে বসে ছিলেন। অথচ বিজেপির কোনও জনপ্রতিনিধিদেরকে ডাকা হয়নি।
এনিয়ে এদিন জেলা শাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগও জানিয়েছে বিজেপির বালুরঘাট টাউন মণ্ডলের সভাপতি সুমন বর্মণ। শুধুমাত্র বইমেলা নয় জেলার সরকারি কোনো অনুষ্ঠানেই বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করা হয় না বলে অভিযোগ তাঁদের। এবারও তার অন্যথা হয়নি। আর এই প্রেক্ষিতে সিদ্দিকুল্লার মন্তব্য ঘিরে শুরু হল বিতর্ক।
এদিন বিকালে বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠে শুরু হয়েছে ২৬ তম জেলা বইমেলা। বইমেলার ফিতে কেটে, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে বইমেলার শুভ সূচনা করেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলাশাসক আয়েশা রানি এ, জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে, কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল- সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিক ও বিশিষ্টজন।
এবারের বই মেলায় মোট ৭০ টি স্টল রয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরে বইমেলার মতই। এরমধ্যে ৫৭ টি বইয়ের স্টল রয়েছে। বাকি ১৩ টি সরকারি স্টল রয়েছে। এবারের বই মেলায় বেশির ভাগই কলকাতা থেকে পাবলিশার্স এসেছেন। বইমেলা চলবে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ‘ভালবাসার মেলবন্ধনে গড়ে উঠুক নতুন বিশ্ব’ এই থিম ও স্লোগানেই বালুরঘাটের শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বইমেলা। তবে সেখানে ডাক নেই কোনও বিজেপি প্রতিনিধিদের।
এর আগে একাধিকবার সিদ্দিকুল্লার মন্তব্যে বিতর্ক হয়েছে। কিছুদিন আগে আসানসোলের বইমেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে সিদ্দিকুল্লা আক্ষেপ করেছিলেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হয়ে মন্ত্রী, আমার মলয়দা-ও মন্ত্রী। এখানে তৃণমূলের ছেলেরাও আছেন। কেউ কাউন্সিলর, কেউ বা অন্য কিছু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৮০ থেকে ৯০টি বই লিখেছেন। কিন্তু আমরা কতজন সেই বই পড়েছি?” আবার সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা করোনা পরিস্থিতিতে বসে বসে মাইনে পেয়েছেন, কাউকে কোনও সাহায্য করেননি, এমন বক্তব্যও শোনা গিয়েছে মন্ত্রীর গলায়।