হুগলি: অভাবের সংসারে মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে পরিবারের। কোনও মেয়ের আবার নানা কারণে বিয়ে হচ্ছে না। খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে যেতেন মগড়া থানার বাঁশবেড়িয়া ইসলামপাড়ার বাসিন্দা জইতুন বিবি। বাড়িয়ে দিতেন সাহায্যের হাত। তাঁর ঘটকালিতেই শেষে কন্যা দায় থেকে মুক্ত হতেন হতদরিদ্র বাবারা। উল্টে হাতে আসত কিছু টাকা। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকার প্রচুর মেয়ের বিয়ের জন্য এভাবেই ঘটকালি করে আসছিলেন জইতুন। তাঁর গতিবিধিতে কারও কোনও সন্দেহও হয়নি। উল্টে মেয়ের বিয়ে না হলে অনেক গরিব বাবাই ছুটে যেতেন জইতুনের কাছে। কিন্তু, দেখা যায় সাম্প্রতিককালে যত মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাঁর হাত ধরে তাঁদের সবাই বিয়ের পর চলে গিয়েছেন কাশ্মীরে। এরইমধ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের বড়গাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তারই তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বড়গামের সেন্টার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সখি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের খোঁজে জানা যায় নারী পাচারের কথা। তদন্তে নামে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। পাঁচজনকে গ্রেফতারও করে। পাচার হওয়া এক মহিলার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জইতুনের নাম সামনে আসে।
বুধবারই কাশ্মীর থেকে দুই মহিলা পুলিশ কর্মী সহ ছয় সদস্যের পুলিশের একটি দল চলে আসে মগড়ায়। লোকাল থানার পুলিশের সঙ্গে মিলে হানা দেয় জইতুনের ডেরায়। ইসলামপাড়া থেকে জইতুন ও তার সঙ্গী মহম্মদ ফিরোজকে গ্রেফতার করে। এদিনই ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হয়। দশদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাশ্মীরে। এদিকে জইতুনের কর্মকাণ্ড দেখে থ পাড়া-প্রতিবেশীরা। অবাক তাঁর স্বামীও।
জইতুনের প্রতিবেশী মহম্মদ সাহবুদ্দিন বলেন, ও ঘটকালি করে জানতাম। অনেক মেয়েকেই কাশ্মীরে বিয়ে দিয়েছে। সেখানকার ছেলেরা মা-বাবার সঙ্গে আসত। টাকা দিয়ে বিয়ে করে নিয়ে যেত। কিন্তু, বিক্রি করার অভিযোগ আগে শুনিনি। অভিযুক্তের স্বামী সুরেশ রায় জানাচ্ছেন, কী হয়েছে তিনি জানেন না। সবে বিহারের দেশের বাড়ি থেকে ফিরেছেন।