মালবাজার: ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। তাই শরীরিরে প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে রাজ্যের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে পাঠিয়েছিল পরিবার। উত্তরের একেবারেই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। বাবা মেয়েকে পড়ানোর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেন। ভেবেছিলেন, মেয়ের চোখে জ্যোতি নেই তো কী, কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সেই গোটা এলাকাকে জ্যোতি দেখাবে। কিন্তু অকালেই ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের দৃষ্টিহীন এক ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে ফের বিতর্ক তৈরি হল।
পরিবারের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্র ও গবেষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁরাও দৃষ্টিহীন। পরিবার জানাচ্ছে, ওই ছাত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল ছাত্রীর। তাঁর মেয়ের কথায়, “যেরকম একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক থাকে, সেরকমই ছিল। কিন্তু মায়ের দাবি, কিছুদিন যেতে না যেতেই মেয়েকে ব্ল্যাকমেল শুরু করে,টাকা দাবি করতে থাকে । এমনকি শারীরিক নির্যাতনে পাশাপাশি মানসিক নির্যাতন করতো।তাকে ড্রাগ দেওয়ারো চেষ্টা করা হয় । আর তা না করলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করা হত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিস্ফোরক মৃত ছাত্রীর দাদু। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের সাদাসিধা মেয়েদের প্রেমের প্রলোভনে ফাঁসিয়ে ওঁদের কাছ থেকে টাকা তোলে ছেলেগুলো। ফুটবলের মতো খেলে মেয়েদেরকে নিয়ে। ফুটবলের মতো খেলে অন্যের কোর্টে ঠেলে দেয়।” কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “এইসব উপরমহল দেখে না কেন? প্রশাসনের সতর্ক হওয়া দরকার। ও বাড়িতে আসার পর ফোনেও ধমকি দেওয়া হত। ওকে বিক্রি করে দেওয়ার ভয় দেখাত।”
১৬ জানুয়ারি পরীক্ষা দিয়ে মালবাজার ফিরে যান ছাত্রী। ১৮ জানুয়ারি তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে পরিবার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, এই বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই বৈঠক ডাকা হবে।