
ময়নাগুড়ি: ভয়াবহ বন্যা। আর তাতে প্রাণ কেড়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক মানুষের। বাড়ি-ঘর সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেই রকমই গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই অঞ্চলের বারোহাতি গ্রাম জলঢাকা নদীর জলের তোড়ে কার্যত তছনছ। বহু ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে নদী। তাদের মধ্যে একটি বাড়ি রয়েছে রায় পরিবারের। আর এই পরিবারের মেয়ে অদিতি রায়। অদিতি পানবাড়ি গার্লস হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া। বন্যায় যেমন তার বাড়ি ভেঙেছে, পাশাপাশি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে তার বইপত্র,স্কুল ড্রেস। তাই তার কাতর আর্জি, যেন ফের বইপত্র, স্কুল ড্রেস ইত্যাদি দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়।
অদিতি বলে, “আমার বই সব ভেসে চলে গেছে। পরার মতো জামা কাপড় নেই। বইখাতা সব চলে গেছে। কী পড়ে পরীক্ষা দেব? ” তবে শুধু অদিতি নয়। ওই গ্রামের অন্য এক পরিবারের মেয়ে মেঘনা রায়। সে ‘বড়বাড়ি প্রাথমিক স্কুলে’ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। বন্যায় তারও অবস্থা একইরকম। তাই তার আর্জি তাকে যেন বইপত্র, স্কুল ড্রেস দেওয়া হয়। তাদের বাড়ি যেন বানিয়ে দেওয়া হয়। মেঘনা বলে, “আমাদের না বইগুলো সব ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বই একটা নেই। স্কুলের ড্রেস ভেসে চলে গেছে। জামা-কাপড়ও নেই।”
ঘটনায় ময়নাগুড়ির বিডিও প্রসেনজিৎ কুন্ডু জানিয়েছেন বানভাসি সমস্ত এলাকায় ক্যাম্প শুরু হয়েছে। সেখানে যার যেইসব ডকুমেন্টস হারিয়ে গিয়েছে তা নথিভুক্ত করা হচ্ছে। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা যদি সেখানে তাদের বইপত্র সহ তাদের বিভিন্ন সমস্যা লিপিবদ্ধ করলে তা শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “স্পেশাল আউট রিচ ক্যাম্প। যার যা হারিয়ে গেছে সবটা এই ক্যাম্প থেকে মিলবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিধ্বংসী বন্যার মুখোমুখি হয়ে সব কিছু হারাবার পর এই ক্ষুদেদের আর কোনও আবদার ছিল না। খাওয়া নেই,দাওয়া নেই এইসব নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই তাদের। একটাই আবদার বই দাও। আমরা পরীক্ষা দেব। পড়াশোনা করব।