মালদহ: জাল এসসি সার্টিফিকেট দেখিয়েই চাকরি হচ্ছে প্রাথমিক স্কুলে। চাকরি, ফুড সাপ্লাই ইন্সপেক্টর পদে এমনকী মেডিক্যালেও এভাবে ভর্তি চলছে বলে অভিযোগ। একের পর এক এমনই দৃষ্টান্ত তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হল মালদহে। অভিযোগ ব্লক এবং জেলা প্রশাসনের কাছে। পাশাপাশি গণসাক্ষর সম্বলিত চিঠিও দেওয়া হচ্ছে।
কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লক এলাকার শাহবাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ডোমাইচক এবং মোহনপুরের ঘটনা। এই এলাকায় মণ্ডল পদবীর বহু মানুষের বসবাস। তাঁদের মধ্যে চাঁই সম্প্রদায়ের যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাই তফশিলি জাতিভুক্ত। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, বাকিরা তফশিলি জাতিভুক্ত নয়। অভিযোগে জানানো হয়েছে, পদবীর মিল থাকার সুযোগ নিয়ে সার্টিফিকেট জাল করার কারবার চালানো আরও সহজ হচ্ছে।
অভিযোগকারীরা বলছেন, এই এলাকায় উভয় মণ্ডল সম্প্রদায়ের একে অপরের সংস্কৃতিগত বহু পার্থক্য রয়েছে। এমনকী এই চাঁই মণ্ডল সম্প্রদায়ের ভাষাও সম্পূর্ণ আলাদা, যদিও তাঁরা বর্তমানে আঞ্চলিক বাংলা ভাষাতেই কথা বলেন। এলাকার চাঁই মণ্ডল সম্প্রদায়ের অভিযোগ, বিডিও অফিসের একাংশের মদতে এবং মোটা টাকার বিনিময়ে এই শংসাপত্রগুলিকে খতিয়ে না দেখে, কোনও তদন্ত ছাড়াই করে দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বিরুদ্ধ বলেই দাবি চাঁই মণ্ডল সম্প্রদায়ের।
এই জাল শংসাপত্র ইস্যুতে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে। ওই এলাকারই এক বাসিন্দা তথা অখিল ভারতীয় চাঁই সাহিত্য সভার মালদহ জেলার সম্পাদক পরিমল মণ্ডল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা দেখছি যে আমাদের এলাকার বেশ কিছু কিসান মন্ডল সম্প্রদায়ের লোক তফশিলি জাতি শংসাপত্র বের করে নিচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন সরকারি চাকরি পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে তারা নিজেদেরকে তফশিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত দেখিয়ে চাকরি করছে।’ বেশ কয়েকটি শংসাপত্র তাঁরা ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
চাঁই সমাজের গণ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি দফতরে পাঠানো হয়েছে। বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রেও খবর, অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।