Kanyashree: বাতিল করা হচ্ছে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের একাধিক আবেদনপত্র, কারণ জানলে চমকে উঠবেন

Subhotosh Bhattacharya | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Mar 20, 2025 | 1:59 PM

Kanyashree: ঘটনা ধরা পড়ে যখন বিডিও পৌঁছন এলাকায়। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও সোনাম ওয়াঙদি লামা জগন্নাথপুর হাই মাদ্রাসার কন্যাশ্রী প্রকল্পের একাধিক আবেদনপত্র হাতে নিয়ে তথ্য যাচাইয়ে যান মশালদহ অঞ্চলের তালগাছি ও করকরিয়া গ্রামে। সেখানে যেতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় তাঁর।

Kanyashree: বাতিল করা হচ্ছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের একাধিক আবেদনপত্র, কারণ জানলে চমকে উঠবেন
ময়দানে বিডিও
Image Credit source: Tv9 Bangla

Follow Us

মালদহ: সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে বছর কয়েক আগে। প্রায় সকলেরই এক বা একাধিক সন্তান রয়েছে। কিন্তু তাঁরাই আবার ‘কন্যাশ্রী’র টাকা পাচ্ছেন বা আবেদন করছেন। কিন্তু কেন? অভিযোগ,  ব্লক অফিসের দায়িত্বরত কিছু কর্মী ও শাসক দলের নেতাদের মদতে চলছে চক্র। ‘কন্যাশ্রীর’ টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েক হাজার করে আগাম টাকা নেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি জানাজানি হতেই ঘটনার তদন্তে প্রশাসন। বাতিল করা হচ্ছে বহু আবেদনপত্র। ইতিমধ্যেই সরকারি দুই কর্মীর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত। আর তদন্ত করছেন স্বয়ং বিডিও। দ্রুত জেলা শাসককে তফন্ত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকে।

কী ঘটেছে?

ঘটনা ধরা পড়ে যখন বিডিও পৌঁছন এলাকায়। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও সোনাম ওয়াঙদি লামা জগন্নাথপুর হাই মাদ্রাসার কন্যাশ্রী প্রকল্পের একাধিক আবেদনপত্র হাতে নিয়ে তথ্য যাচাইয়ে যান মশালদহ অঞ্চলের তালগাছি ও করকরিয়া গ্রামে। সেখানে যেতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় তাঁর। আবেদনকারী ছাত্রীদের নথিপত্র খতিয়ে দেখতেই ধরা পড়ে একাধিক ভুয়ো কন্যাশ্রী বলে অভিযোগ। এরপর বহু আবেদন পত্র বাতিল করেন বিডিও।

বস্তুত, ছাত্রীদের যাতে পড়াশোনার জন্য কোনও রকম আর্থিক সমস্যা না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার চালু করে ‘কন্যাশ্রী প্রকল্প’। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী অবিবাহিত মেয়েদের পড়াশোনায় খরচ করার জন্য বছরে ১০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। পাশাপাশি ১৮ বছরের পরেও তাঁরা অবিবাহিত থাকলে এককালীন দেওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা পান।

অভিযোগ, সেই ২৫ হাজার টাকা পেতে অবিবাহিত দেখিয়ে বিয়ের পর আবেদন করেছিলেন বহু এক বা একাধিক সন্তানের মায়েরা। যা তাঁরা নিজেরাও স্বীকার করেছেন। তাঁদের আবার অভিযোগ, দুই মাস আগে পঞ্চায়েত ও ব্লকের কর্মীর পরিচয় দিয়ে দু’জন ব্যক্তি কন্যাশ্রীর আবেদন পত্র নিয়ে ফিল্ড ভেরিফিকেশনে এসেছিলেন। প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবার থেকে ২-৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ব্লকের কর্মীরাও জড়িত রয়েছে। ‘ফিল্ড ভেরিফিকেশনে’ গিয়ে টাকা আদায় করে মিথ্যা রিপোর্ট ব্লকে জমা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিডিও তাপস কুমার পাল।

জগন্নাথপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্রী তথা আবেদনকারী সুকতারা খাতুনের কাকিমা বেদারা খাতুন বলেন, “তিন বছর আগে ভাইজির বিয়ে হয়েছে। আমার দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর কন্যাশ্রী আবেদন করেছিলাম। দুই মাস আগে ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মীর পরিচয় দিয়ে দু’জন এসেছিলেন। প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। ৩ হাজার টাকা দিয়েছি। তবে তাঁদেরকে চিনি না।” ওই হাই মাদ্রাসার আরেক ছাত্রী সাবনাজ খাতুন বলেন, “দুই বছর আগে আমার বিয়ে হয়েছে। ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। এখন বাবার বাড়িতে আছি। বিয়ের পর একাদশ শ্রেণীতে কন্যাশ্রীর জন্য কে ২ (K2) আবেদন করেছিলাম। প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মীর পরিচয় দিয়ে দু’জন এসে ৩৫০০টাকা নিয়ে গিয়েছেন।”

জগন্নাথপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাহাবুদ্দীন আবার বলেন,”পঞ্চায়েত থেকে অবিবাহিত সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আর সেই অবিবাহিত সার্টিফিকেট দেখিয়ে কন্যাশ্রী জন্য আবেদন করেন ছাত্রীরা। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী পোর্টালে সমস্ত ডকুমেন্টস আপলোড করতে হয় স্কুলকে। এরপর ব্লকের নির্দেশে তদন্তে যায় ব্লক ও পঞ্চায়েত কর্মীরা। কখনও আইসিডিএস কর্মীরা তদন্ত রিপোর্ট পাঠান ব্লকে। এখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও হাত নেই। তবে বিয়ে হয়ে যাবার কথা জানতে পেরে আমি ৮ থেকে ১০ টি কন্যাশ্রী আবেদন পত্র বাতিল করেছি।”

হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও সোনাম ওয়াঙদি লামা বলেন, “তালগাছি ও করকরিয়া গ্রামে ১৬ টি কন্যাশ্রী আবেদন পত্রের তথ্য যাচাই করলাম। এর মধ্যে ১৪ টি ভুয়ো কন্যাশ্রী। টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলাম এক ব্লক কর্মীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”