উত্তর ২৪ পরগনা: করোনাকালে কাজ হারিয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে ‘আত্মঘাতী’ এক যুবক। ঘর থেকে মিলল পচা দেহ। মঙ্গলবার সকাল থেকে মৃত যুবকের বাড়ির সামনে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু হলে সংশয়ী হয়ে ওঠেন প্রতিবেশীরা। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখা যায়, ঘরের সিলিঙ থেকে যুবকের ঝুলন্ত পচা দেহ (Hanging Body) দেখতে পান এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুকুমার সর্দার। ঘটনায় চাঞ্চল্য দেগঙ্গা বাজারের হরেকৃষ্ণ কলোনিতে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৃত বছর ছত্রিশের সুকুমার প্রতিবন্ধী ছিলেন। একটি হাত না থাকায় টিউবয়েলে রঙ করার কাজ করেই দিন গুজরান করতেন। কলোনির বাড়িতে একাই থাকতেন সুকুমার। কোনও আত্মীয়স্বজন তেমন ছিল না। লকডাউনে তাঁর কাজ চলে যায়। বেশ কিছুদিন ধরে সুকুমারকে এলাকায় দেখা যাচ্ছিল না। এরপর, মঙ্গলবার সকালে তাঁর ঘরের সামনে থেকে বিশ্রী পচা গন্ধ বেরতে শুরু করলে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। তাঁরাই ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সুকুমারের ঝুলন্ত দেহটি (Hanging Body) আবিষ্কার করেন। সঙ্গে সঙ্গে থানাতে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
মৃতের প্রতিবেশী সুভাষী দত্তের কথায়, “বুড়ো অনেকদিন ধরে একাই এখানে থাকত। ওর কোনও আত্মীয়স্বজন ছিল না। খুব নির্ঝঞ্ঝাট ছেলে ছিল। আমাদের সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল। কিছুদিন ধরে ওকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। আজ সকাল থেকে ওর বাড়ির সামনে থেকে পচা গন্ধ বেরতে শুরু করে। প্রথমে ভেবেছিলাম কুকুর মরেছে বুঝি। পরে, পাড়ার অন্য ছেলেদের ডেকে বলি, বুড়ো কই খোঁজ এনে দিতে। ওর ঘরে গিয়ে অনেক ডাকাডাকির পর যখন দরজা খোলেনি, তখন দরজা ভাঙতে দেখি, গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। দেহ পচে গিয়েছে।”
দেগঙ্গার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, লকডাউনে কাজ চলে যাওয়ায় রোজগারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় সুকুমারের। ভিন্ন উপায় না দেখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। কমপক্ষে তিন থেকে চারদিন আগে মৃত্যু হয়েছে সুকুমারের। তবে এই ঘটনায় অন্য কেউ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: মিলছে না রেশন কার্ড, ২০হাজার মানুষের ‘দুয়ারে’ জিজ্ঞাসাবাদের নিদান লাভলীর