খড়দহ: দীর্ঘ ৬ বছরের প্রেম। ছেলেটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। আর মেয়েটা উচ্চাকাঙ্খী, বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত। পরিবারের সদস্যদের কথায়, তার নাকি লিপস্টিক, নেল পলিশের দামই প্রচুর। বয়ফ্রেন্ড হিসাবে প্রেমিকার সমস্ত বায়না মেটাতে গিয়েই নিঃস্ব হচ্ছিলেন। তারপরও প্রেমিকার মন মজেছিল অন্য পুরুষে। তাতেই চরম সিদ্ধান্ত। ঘর থেকে উদ্ধার হয় যুবকের ঝুলন্ত দেহ। খড়দার কল্যাণনগর মাঠপাড়া এলাকায় বছর সাতাশের এক যুবকের রহস্যমৃত্যুতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মৃতের নাম বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়।
খড়দহ কল্যাণ নগর মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রেম ছিল খড়দহ কুলিনপারার যুবতী মৌসুমী দাসের। বিক্রম নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলে। মৌসুমীর এক একটা লিপস্টিক, নেলপলিস, মেক আপের জিনিসের দামই অনেক। বয়ফ্রেন্ডের কাছে আবদার করেই চলত সে। আর তা মেটাতে যথাসর্বস্ব চেষ্টা করতেন বিক্রম। তবুও টাকার খামতি হচ্ছিল।
বিলাসবহুল জীবন যাপনের জন্য বিক্রমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল মৌসুমী। বিক্রম নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও ভালোবাসার জন্য মৌসুমীর সব শখ পূরণ করার চেষ্টা করেছিল। তেমনই দাবি করছে পরিবার। কিন্তু তাতেও পোষাচ্ছিল না মৌসুমীর। চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছিল। তাই চাহিদা মেটাতে বিক্রম ছাড়াও অন্য যুবকের প্রেমে মজেছিল সে।
বিক্রম সেকথা জানতেও পেরে গিয়েছিল। তা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয়। পরিস্থিতি এবং মানসিক চাপে চরম সিদ্ধান্ত নেন বিক্রম। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘর থেকে উদ্ধার হয় বিক্রমের ঝুলন্ত দেহ। ফ্যানে গামছা লাগানো অবস্থায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিল বিক্রমের দেহ। ঘটনার পর বিক্রমের পরিবারের সদস্যরা মৌসুমীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুুলে রহড়া থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু গ্রেফতার হননি মৌসুমী। তবে এখনও অধরা সে। পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে পরিবার।
বিক্রমের মা বলেন, “মেয়েটার আমাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। আমাদের বাড়িতে থাকত, খেত। ২৩ জানুয়ারিও আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমার ছেলে যেদিন এই ঘটনাটা ঘটিয়েছি, তার পর দেখি আমার ছেলের মোবাইলে কত কী জিনিস। মোবাইল অন্তত বাজে কথা বলে ওর ওপর চাপ দিত। গাড়ি কিনি দিতে বলত। আমার ছেলে বলত আমার সময় লাগবে। ওকে বুঝিয়েও কোনও লাভ হয়নি। আমি চাই মেয়েটার শাস্তি হোক। যাতে আর কোনও মায়ের কোল খালি না হয়। ”