কলকাতা: সরবেরিয়া! গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলা তথা জাতীয় রাজনীতির লাইমলাইটে চলে এসেছে। নেপথ্যে শেখ শাহজাহান। তাঁর বাড়িতেই তল্লাশি চালাতে গিয়ে মাথা ফাটাতে হয়েছে ইডি আধিকারিকদের। কলাবাগান দিয়ে দৌড়ে বাইক,অটোতে কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচতে হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। শাহজাহানের ‘ফ্যান ফলোয়ার্স’রা দেখিয়ে দিয়েছেন জনরোষ কাকে বলে! বাংলার দুর্নীতি তদন্তের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তল্লাশি অভিযানের সিরিজ়ে একটা ‘মডেল’ তৈরি করেছে সন্দেশখালির এই প্রত্যন্ত গ্রাম। গ্রামে রীতিমতো ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন শেখ শাহজাহান। আর তাঁকে বাঁচাতে গ্রামে মানুষ যা করেছেন, সেটাই নাকি স্বাভাবিক। আকুঞ্জবেরিয়ার বুকে দাঁড়িয়ে আজও একথা বলছেন অনুগামীরা।
বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ডের পর শুক্রবার গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। ওই গ্রামে মোট চারটি বাড়ি শেখ শাহজাহানের। হলুদ রঙা বাড়িটিতে থাকেন শাহজাহান। এদিন সে বাড়ি ছিল তালাবন্ধ। তার আশপাশের এলাকা দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে পাড়ার মোড়ে দেখা গেল জটলা। অত্যুৎসাহী কয়েকজন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি দেখে এগিয়েও এলেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রশ্ন করা হল, কাল যা হয়েছে সেটা ঠিক? ব্যক্তির সাফ জবাব ‘হ্যাঁ’। সঙ্গে এটাও বললেন তিনি। সঙ্গে এটাও তিনি স্পষ্ট করে দিলেন, “আমি কিন্তু কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে বলছি না।”
তিনিই বললেন, “শেখ শাজাহান গতকাল বাড়িতে ছিলেন না। আমরা তৃণমূলের পক্ষে যারা আছি সকলে আইনকে ভালবাসি, শ্রদ্ধা জানাই। যদি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে কেউ শেখ শাহজাহানের নাম করে, তবে আইনি নোটিস পাঠানো যেত। নোটিস পাঠালে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই হত। কোনও নোটিস ছাড়াই আচমকা বাড়িতে এসে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভাঙতে শুরু করল।”
ওই ব্যক্তিই জানালেন, শাহজাহানের বাড়িতে অসুস্থ মা, বাচ্চা রয়েছে। ঘটনার সময়ে তাঁরা কান্নাকাটি করছিলেন। তাঁর কথায়, তখনই গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করেছিলেন। আর তাতেই লাঠিচার্জ। তাঁর কথায়, “আমরা বলেছিলাম, আপনারা চলে যান, নোটিস দিয়ে যান। নোটিস দিলে শাহাজাহান আদালতে পৌঁছে যাবেন। সেখানে আইনি লড়াই হবে। কথা না শোনায় গ্রামের মানুষ, মহিলারা আন্দোলনে নেমেছিলেন। বাধ্য হয়েছি আমরা।”
আর এসবের নেপথ্যে একটাই কথা বলছেন তিনি, কেনই বা হবে না আন্দোলন? কারণ তাঁর কথায়, ‘শাহজাহান গ্রামের প্রত্যেকটা মানুষের উপকার করেছে। সবার পাশে থাকেন।” কথাগুলি তিনি যখন বলছিলেন, এগিয়ে এলেন গ্রামেরই আরেক যুবক। তিনি বললেন, “শাহজাহান শেখ না তৃণমূল না সিপিএম না বিজেপির নেতা। তিনি জনগণের নেতা! তিনি আমাদের ভগবান। এটা একটা জনরোষ! ভগবানের ভক্তদের যা করণীয় তাই করেছে।”
তবে ধুন্ধুমারকাণ্ডের পিছনে বিজেপি-যোগেরও অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি বলেন, “হাজার হাজার লোকের ভিড়ে বিজেপির সমর্থকেরা ঢুকে এ কাজ করেছে। গাড়ি ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজেরাই ভাঙচুর করেছে। একটা প্রমাণ দেখান, ছবি আছে? কোনও ফুটেজ নেইঁ।” কিন্তু সংবাদমাধ্যমের গাড়ি তো অনুগামীরাই ভেঙেছে, প্রশ্ন করা হল।
তিনি বললেন, “কে গাড়ি ভাঙচুর করেছে জানি না। কোনও প্রমাণ নেই। আমাদের চোখে পড়েনি। এটা একটা জনরোষ। শাহজাহান আমাদের কাছে ভগবানের স্বরূপ। এলাকার মানুষের কাছে শাহজাহান মানে গরিব মানুষের ভরসার জায়গা। যাঁরা দুবেলা খেতে পেত না, তাঁদের অন্ন সংস্থান করতেন।” তিনি এটাও বলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ত্রাণ লুঠের যে অভিযোগ করছেন, তা মিথ্যা। তাঁর কথায়, “ভগবানের গায়ে কালি ছেটানো হচ্ছিল, ভক্তরা প্রতিবাদ করেছে।”
তাঁদের উদ্দেশে ছিল শেষ প্রশ্ন। শেখ শাহজাহান কোথায়? তিনি বলেন, “শেখ শাহজাহান ব্যস্ত মানুষ। এলাকায় তাঁর অনেক ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ।” তিনিও শেষ কথা বললেন, “শাহজাহান শেখ প্রকৃত সুন্দরবনের বাঘ। তিনি কোথাও লুকিয়ে থাকেন না। এলাকা দখলের জন্য কুকুরেরা লড়াই করে বাঘরা নয়। বাঘেরা যেখানে থাকে সেটাই তার এলাকা। শাহজাহান শেখ যেখানে আছেন সেখান থেকেই উনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে সবার সামনে আসবেন।”
কলকাতা: সরবেরিয়া! গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলা তথা জাতীয় রাজনীতির লাইমলাইটে চলে এসেছে। নেপথ্যে শেখ শাহজাহান। তাঁর বাড়িতেই তল্লাশি চালাতে গিয়ে মাথা ফাটাতে হয়েছে ইডি আধিকারিকদের। কলাবাগান দিয়ে দৌড়ে বাইক,অটোতে কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচতে হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। শাহজাহানের ‘ফ্যান ফলোয়ার্স’রা দেখিয়ে দিয়েছেন জনরোষ কাকে বলে! বাংলার দুর্নীতি তদন্তের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তল্লাশি অভিযানের সিরিজ়ে একটা ‘মডেল’ তৈরি করেছে সন্দেশখালির এই প্রত্যন্ত গ্রাম। গ্রামে রীতিমতো ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন শেখ শাহজাহান। আর তাঁকে বাঁচাতে গ্রামে মানুষ যা করেছেন, সেটাই নাকি স্বাভাবিক। আকুঞ্জবেরিয়ার বুকে দাঁড়িয়ে আজও একথা বলছেন অনুগামীরা।
বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ডের পর শুক্রবার গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। ওই গ্রামে মোট চারটি বাড়ি শেখ শাহজাহানের। হলুদ রঙা বাড়িটিতে থাকেন শাহজাহান। এদিন সে বাড়ি ছিল তালাবন্ধ। তার আশপাশের এলাকা দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে পাড়ার মোড়ে দেখা গেল জটলা। অত্যুৎসাহী কয়েকজন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি দেখে এগিয়েও এলেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রশ্ন করা হল, কাল যা হয়েছে সেটা ঠিক? ব্যক্তির সাফ জবাব ‘হ্যাঁ’। সঙ্গে এটাও বললেন তিনি। সঙ্গে এটাও তিনি স্পষ্ট করে দিলেন, “আমি কিন্তু কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে বলছি না।”
তিনিই বললেন, “শেখ শাজাহান গতকাল বাড়িতে ছিলেন না। আমরা তৃণমূলের পক্ষে যারা আছি সকলে আইনকে ভালবাসি, শ্রদ্ধা জানাই। যদি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে কেউ শেখ শাহজাহানের নাম করে, তবে আইনি নোটিস পাঠানো যেত। নোটিস পাঠালে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই হত। কোনও নোটিস ছাড়াই আচমকা বাড়িতে এসে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভাঙতে শুরু করল।”
ওই ব্যক্তিই জানালেন, শাহজাহানের বাড়িতে অসুস্থ মা, বাচ্চা রয়েছে। ঘটনার সময়ে তাঁরা কান্নাকাটি করছিলেন। তাঁর কথায়, তখনই গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করেছিলেন। আর তাতেই লাঠিচার্জ। তাঁর কথায়, “আমরা বলেছিলাম, আপনারা চলে যান, নোটিস দিয়ে যান। নোটিস দিলে শাহাজাহান আদালতে পৌঁছে যাবেন। সেখানে আইনি লড়াই হবে। কথা না শোনায় গ্রামের মানুষ, মহিলারা আন্দোলনে নেমেছিলেন। বাধ্য হয়েছি আমরা।”
আর এসবের নেপথ্যে একটাই কথা বলছেন তিনি, কেনই বা হবে না আন্দোলন? কারণ তাঁর কথায়, ‘শাহজাহান গ্রামের প্রত্যেকটা মানুষের উপকার করেছে। সবার পাশে থাকেন।” কথাগুলি তিনি যখন বলছিলেন, এগিয়ে এলেন গ্রামেরই আরেক যুবক। তিনি বললেন, “শাহজাহান শেখ না তৃণমূল না সিপিএম না বিজেপির নেতা। তিনি জনগণের নেতা! তিনি আমাদের ভগবান। এটা একটা জনরোষ! ভগবানের ভক্তদের যা করণীয় তাই করেছে।”
তবে ধুন্ধুমারকাণ্ডের পিছনে বিজেপি-যোগেরও অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি বলেন, “হাজার হাজার লোকের ভিড়ে বিজেপির সমর্থকেরা ঢুকে এ কাজ করেছে। গাড়ি ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজেরাই ভাঙচুর করেছে। একটা প্রমাণ দেখান, ছবি আছে? কোনও ফুটেজ নেইঁ।” কিন্তু সংবাদমাধ্যমের গাড়ি তো অনুগামীরাই ভেঙেছে, প্রশ্ন করা হল।
তিনি বললেন, “কে গাড়ি ভাঙচুর করেছে জানি না। কোনও প্রমাণ নেই। আমাদের চোখে পড়েনি। এটা একটা জনরোষ। শাহজাহান আমাদের কাছে ভগবানের স্বরূপ। এলাকার মানুষের কাছে শাহজাহান মানে গরিব মানুষের ভরসার জায়গা। যাঁরা দুবেলা খেতে পেত না, তাঁদের অন্ন সংস্থান করতেন।” তিনি এটাও বলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ত্রাণ লুঠের যে অভিযোগ করছেন, তা মিথ্যা। তাঁর কথায়, “ভগবানের গায়ে কালি ছেটানো হচ্ছিল, ভক্তরা প্রতিবাদ করেছে।”
তাঁদের উদ্দেশে ছিল শেষ প্রশ্ন। শেখ শাহজাহান কোথায়? তিনি বলেন, “শেখ শাহজাহান ব্যস্ত মানুষ। এলাকায় তাঁর অনেক ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ।” তিনিও শেষ কথা বললেন, “শাহজাহান শেখ প্রকৃত সুন্দরবনের বাঘ। তিনি কোথাও লুকিয়ে থাকেন না। এলাকা দখলের জন্য কুকুরেরা লড়াই করে বাঘরা নয়। বাঘেরা যেখানে থাকে সেটাই তার এলাকা। শাহজাহান শেখ যেখানে আছেন সেখান থেকেই উনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে সবার সামনে আসবেন।”