কাটোয়া: মাঝে মধ্যেই তাদের দেখা মেলে খাবারের সন্ধানে। গ্রামের অনেকেই তাদের হাতে খাবারও ধরিয়ে দেন। আবার এলাকা ছেড়ে নিজেদের আস্তানায় ফিরে যায় হনুমানের দল। কিন্তু সোমবার যে ছবি দেখা গেল, তাতে শিউরে উঠছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা বলছেন, ‘চোখে দেখা যাচ্ছে না।’ এদিক-ওদিক পড়ে রয়েছে হনুমানের দেহ। কী এমন ঘটল যে এলাকা জুড়ে এভাবে মৃত্যু হল একের পর এক হনুমানের! ভেবেই পাননি গ্রামবাসীরা। আর এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করল বন দফতর।
বর্ধমানের কেতুগ্রামের শাখাই গ্রামে একের পর এক হনুমানের মৃত্যু ঘুরে রহস্য তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে বিষক্রিয়া নাকি অন্য কোনও কারণ? খবর পেয়ে গ্রামে যান বন দফতরের আধিকারিকরা। পুরো ঘটনা খতিয় দেখার পর সাগর দাস নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হনুমানদের বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
সাগর দাস নামে ওই ব্যক্তি ফেরিঘাটের মালিক। কাটোয়া শাখায় ফেরিঘাট লিজ রয়েছে তাঁর নামে। তদন্তের জন্য তাঁকে কাটোয়া বন দফতরে তলব করা হয়। অভিযোগ, সাগর দাস ফেরিঘাটের পাশের সর্ষের জমিতে হনুমানের উৎপাত থেকে রেহাই পেতে কলার সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে রেখেছিলেন। তা খেয়েই হনুমানগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাগর দাস। তাঁর দাবি, হনুমানদের জন্য নয়, সর্ষে জমিতে পোকা থেকে রেহাই পেতেই কীটনাশক দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, এভাবে প্রতি বছরই তিনি কীটনাশক ছড়ান। আর তাঁর জমিতে কোনও হনুমানের দেহ পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছেন সাগর দাস। তিনি বলেন, “রাজনীতি করে ফাঁসানো হচ্ছে আমাকে।” আপাতত পুলিশ ও বন দফতর যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কেতুগ্রামের শাখাই গ্রাম সহ আরও কয়েকটি গ্রামে দু’দিনে মোট ১০ হনুমানের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহগুলি বর্ধমানের রমনা বাগানে পাঠিয়েছে বন দফতর। এলাকায় বাকি হনুমানদের উপর নজর রাখা হয়েছে। ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও এই বিষয়ে রেঞ্জার শিব প্রসাদ সিনহা জানিয়েছেন, কেতুগ্রামে হনুমানের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সাগর দাসের নামে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের জন্য তাঁকে বন দফতরে তলব করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।