পূর্ব বর্ধমান: বৃষ্টি থামলেও পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমের একাধিক জায়গা এখনও জলমগ্ন। পরিস্থিতির হালহকিকত নিয়ে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব বর্ধমানে জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক করেন তিনি। এরপরই এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, তিনি সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আরও তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরও মুখোমুখি হন। জানান, বন্যা পরিস্থিতিতে আরও সক্রিয় হয়ে নীচুতলায় কাজ করতে বলা হয়েছে। মমতা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আবারও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। নতুন করে জল আসলে, ডিভিসি জল ছাড়লে নতুন করে প্লাবিত হতে পারে। তবে বিডিও, আইসিদের নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কৃষকরা যেন চিন্তা না করেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জমি মেপে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের শস্যবিমার টাকার ব্যবস্থা করা হবে। বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনায় যেখানে চাষের জমি ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের জমি মেপে শস্যবিমার টাকার ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার কথায়, “গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান, ফ্লাড কন্ট্রোল সবই ডিভিসির এবং কেন্দ্রের হাতে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাজ করেনি। লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘর, কৃষিজমি ডুবে যাচ্ছে। শস্যজমি ডুবে যাচ্ছে।” তিনি জানান, পরিস্থিতি নজরে রাখতে ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
মমতা বলেন, পানীয় জলের খামতি যেন না হয় তা দেখতে বলা হয়েছে। পূর্ত দফতর ভাঙা রাস্তার সমীক্ষা করবে। মমতার কথায়, “ডিসেম্বর মাসে পঞ্চায়েত দফতর ১১ লক্ষ মাটির বাড়ির টাকা ছাড়বে। পাকা বাড়ি করার জন্য অর্ধেক টাকা ছাড়া হবে প্রথম কিস্তিতে। জল কমলেই সার্ভে করবে পঞ্চায়েত দফতর। মাইনরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকেও ৬৫ হাজার বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে অথচ তালিকায় নাম নেই, তাদেরও আমার মনে হয় বাড়ি সার্ভে করে দেখা হোক।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুলিশ কমিউনিটি কিচেন করছে। পুলিশ কাজ করছে। সাধ্যমতো ড্রাই প্যাকেট করে দিচ্ছে। মুড়ি, ডাল, আলু, সয়াবিন, বাচ্চাদের দুধ, সর্ষের তেল যা যা প্রয়োজন তা দেওয়া হচ্ছে। আবার বন্যা হলে দেওয়া হবে। মানুষ যেন না ভাবেন বিপদে পড়ে আছেন। বিধায়কদের বলা হয়েছে, তাঁদের কোটার টাকায় গ্রামের রাস্তা করতে, সাংসদদের কাছেও একই অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর।
বর্ধমান থেকে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে দুর্গাপুর যাবেন। ওখানেই রাত কাটানোর কথা। মঙ্গলবার বীরভূম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী।